ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির কর্মকর্তাদের জন্য অনুষ্ঠিত বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৮৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। বাকি ১২ শতাংশ কর্মকর্তার জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ শেষে পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হবে। গত মঙ্গলবার রাতে এই বিশেষ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত শনিবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) এই পরীক্ষার আয়োজন করে।
ব্যাংক সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়া প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যাঁদের বড় অংশ এস আলমের এলাকা চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার। ফলে বর্তমানে ব্যাংকের প্রায় অর্ধেক কর্মী ওই এলাকার। এসব নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়ম ও অযোগ্যতার অভিযোগ ওঠে। যোগ্যতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে শনিবার অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অনেকে অংশ নেননি। অংশ না নেওয়া ২০০ জনকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ৪ হাজার ৯৭১ জনকে ওএসডি করা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মানবসম্পদ উন্নয়ন) ড. কামাল উদ্দীন জসীম বলেন, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ না করে অনেককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেসব কর্মীর দক্ষতা যাচাই ও বাছাইয়ের অংশ হিসেবে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। অনেকে সেই পরীক্ষায় অংশ নেননি। যাঁরা অংশ নেননি, তাঁদের ওএসডি করা হয়েছে। আর চাকরির বিধি লঙ্ঘন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় লেখালেখি করেছেন, এমন কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এসব কর্মীর অনেকের একাডেমিক সনদ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জাল সনদের কারণে এরই মধ্যে অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকালে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে ব্যাংকটি গভীর আর্থিক সংকটে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংককে এস আলমের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে নতুন পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর থেকে অযোগ্য ও অনিয়মিত নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের চিহ্নিত করতে বিশেষ যোগ্যতা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়।