অধ্যাদেশে বড় সংশোধন
রাজস্বনীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিবসহ অন্যান্য পদে নিয়োগে রাজস্বসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়ার বিধান রেখে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে অধ্যাদেশে কী কী সংশোধন করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।
সূত্র জানায়, সরকার উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো ব্যক্তিকে রাজস্বনীতি বিভাগে সচিব পদে নিয়োগ দিতে পারবে বলে আগের অধ্যাদেশে বলা হয়েছিল। সংশোধিত অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্যনীতি, রাজস্বনীতি, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বা রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
আর আগের অধ্যাদেশে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বা আদায় বিভাগের সচিব পদে রাজস্ব আহরণকাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, শুধু রাজস্ব সংগ্রহে অভিজ্ঞতা থাকা ব্যক্তি এ পদে নিয়োগ পাবেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী রাজস্বনীতি প্রণয়ন করবে একটি বিভাগ এবং আদায় করবে আরেক বিভাগ।
সূত্র জানায়, আগের অধ্যাদেশের ১১টি ধারায় সংশোধন করে দুই বিভাগের সচিব পদ বাদেও অন্যান্য পদে রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। রাজস্বনীতি বিভাগে নীতিসংক্রান্ত কাজে রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞরা নিয়োগ পাবেন। আগের অধ্যাদেশে এখানে সরকারের অন্য বিভাগ থেকেও পদায়নের সুযোগ ছিল।
গত ১২ মে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জুন মাসের শেষের দিকে দেশের শুল্ক-কর কার্যালয়ের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এমন অবস্থায় ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত করেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এখন এনবিআরে চলছে আন্দোলনের জেরে বরখাস্ত, বদলিসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
আন্দোলনের মুখে অধ্যাদেশটি সংশোধনের জন্য গত ২৯ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশটি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিল।