দেশে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। স্থিতিশীল সরকার না থাকলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়, নতুন কর্মসংস্থানে ব্যাঘাত ঘটে। মানুষের আয় কমে বা স্থির থাকে, আর মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ক্রয়ক্ষমতাকে সীমিত করে। এর প্রভাব পড়ে উৎপাদন ও চাহিদার ওপর, যা শেষমেশ অর্থনৈতিক প্রবাহকে ধীর করে দেয়।
সব মিলিয়ে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সরাসরি দেশকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ধাবিত করে। স্থিতিশীল ও গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে জীবনবিমার সম্পর্কও গভীরভাবে জড়িত। এই অনিশ্চয়তার ছায়া এখন নতুন বিমা গ্রহণে স্পষ্ট। মানুষ নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে চায়, কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতিতে অনেকে এখন আগের মতো বিমায় আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
একদিকে বিভিন্ন ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারছে না। পাশাপাশি পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হওয়ার খবরে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আবার কিছু বিমা কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে মানুষের মধ্যে বিমার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে এবং অনেকে আগের পলিসি বাতিল করছে।
বিশেষ করে, পাঁচ-সাতটি কোম্পানির কারণে গত দুই-তিন বছর নতুন পলিসি ইস্যু হয়নি, ফলে বিমা গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে। তবে মেটলাইফসহ বড় কোম্পানির পলিসি চলমান থাকায় প্রিমিয়াম আয় কিছুটা বেড়েছে; যা খাতের অস্থিরতার মাঝেও সামান্য সান্ত্বনা দেয়। তবে আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এলে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দাবি পরিশোধের হার বাড়বে, যা বিমা গ্রাহকের হারও পুনরায় বাড়াবে এবং এ খাতের আস্থা ফিরিয়ে আনবে। একই সঙ্গে খাতের শৃঙ্খলায়ও নজর দেওয়া জরুরি। কোম্পানিগুলোকে গ্রাহকের পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে, প্রিমিয়াম সংগ্রহে এজেন্টের ওপর নির্ভর না করে অনলাইন ব্যাংক, নগদ, বিকাশ ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
মো. কাজিম উদ্দিন,মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স