হোম > অর্থনীতি

ব্যাংক একীভূত ও এনবিএফআই বন্ধ

বিনিয়োগকারীর কণ্ঠ নেই কমিটিতে

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতে বড় পরিবর্তনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বহুদিনের সমস্যাগ্রস্ত ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এভাবে মোট ১৪টি প্রতিষ্ঠানের এই বড়সড় রদবদল বিনিয়োগকারীদের সামনে বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে; কারণ, এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর এই ব্যাংক ও এনবিএফআইগুলোয় শেয়ারে বিনিয়োগজনিত অর্থ রয়েছে। অথচ তাঁদের স্বার্থরক্ষাকারী সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এ প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ পাশ কাটিয়ে রাখা হয়েছে।

এর ফলে এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছে কোনো বার্তা না যাওয়ায় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। প্রায় দুই মাস ধরে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর পড়েছে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, এখন এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ এবং তাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সুরক্ষা কীভাবে হবে, সবকিছুই অস্পষ্ট। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো সংস্থা এখন পর্যন্ত তাদের উদ্দেশে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়নি। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসিও এ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

এমনকি ব্যাংক একীভূতকরণ বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) যে আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে, সেখানে পর্যন্ত বিএসইসির কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও আগে থেকে কোনো বার্তা পাচ্ছে না। তাই মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) তারা প্রকাশ করতে পারছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এখনো দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ বা ৯টি এনবিএফআই বন্ধের বিষয়ে কোনো সরকারি ঘোষণা নেই। পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর ডিএসই বিষয়টি তাদের কাছে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানই জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কিছুই জানায়নি। কেউ কেউ বলেছে, তারা এই প্রক্রিয়া ঠেকানোর চেষ্টা করছে।

দীর্ঘ সময় ধরেই বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকেরা বলে আসছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়, স্থায়িত্ব বা টিকে থাকার ওপর প্রভাব ফেলে এমন সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় থাকা জরুরি। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক বড় সিদ্ধান্তগুলোয় বিএসইসিকে প্রায়ই পাশে রাখে না। শুধু বন্ড-সংক্রান্ত কিছু উদ্যোগে দুই সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা দেখা গেছে। অথচ এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয়ে আলোচনা হলে বাজারে বিনিয়োগকারীর আস্থার বার্তা যেত।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যাংক একীভূতকরণ খুব স্পর্শকাতর বিষয়। বিনিয়োগকারীদের অন্ধকারে রাখা ঠিক হয়নি। বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সবার আগে স্টক এক্সচেঞ্জের দাঁড়ানো উচিত ছিল, কিন্তু সেটাও হয়নি। আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি, তাতেও সাড়া পাইনি। এসব জায়গায় সমন্বয়ের বড় অভাব রয়েছে, যা আগেও দেখা গেছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুঁজিবাজার এমনিতেই অতি সংবেদনশীল। কোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ারের দরে প্রভাব ফেলে। অথচ অন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখানে অর্থ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তারা চাইলে নির্দেশনা দিয়ে নিশ্চিত করতে পারে, তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তের আগে বিএসইসির সঙ্গে পরামর্শ বাধ্যতামূলক হবে।

এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তো পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বিএসইসিকে জানাবে। আবার এমনও হতে পারে, ব্যাংক রেজল্যুশন অনুযায়ী গঠিত ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলে বিএসইসির চেয়ারম্যান সদস্য থাকায় সেখানে আলোচনার সুযোগও রয়েছে।

আবার এটাও সম্ভব, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচলিত ব্যাংক রেজল্যুশন পদ্ধতি অনুযায়ী একীভূতকরণের পথে হাঁটতে চাইছে। যেখানে পুরো কর্তৃত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। কারণ, সাধারণ নিয়মে একীভূতকরণ করতে হলে শেয়ারহোল্ডার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর মতামত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

তবে একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় যে বিষয়টি স্পষ্ট, তা হলো এই পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে আগে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করতে হবে। এরপর নতুন ব্যাংককে তালিকাভুক্ত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা ছাড়া উপায় নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে বলেন, একীভূতকরণ প্রক্রিয়া জটিল এবং সময়সাপেক্ষ। বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বসতে হবে। যখন পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কথা উঠবে, তখন অবশ্যই তাদের সঙ্গে বসা হবে।

বিনিয়োগকারীদের কাছে কোনো বার্তা না যাওয়ায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, এমন মন্তব্যে আরিফ হোসেন খান বলেন, যেহেতু এখনো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, তাই বিনিয়োগকারীদের কিছু জানানো হয়নি। তবে ধাপে ধাপে বিষয়গুলো সমাধান করা হবে।

অন্যদিকে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি যখন আমাদের কাছে আসবে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার জন্য যা করণীয়, তা আমরা করব।’

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা শুরু রোববার

প্রশান্ত মহাসাগরে দুই প্রকল্পের অনুমোদন দিল এডিবি-বিশ্বব্যাংক

এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা

১৪টি বন্ধ পাটকল বেসরকারি খাতে, আরও হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মেট্রো রেলস্টেশনে ৯টি সুপারস্টোর চালু করবে এমজিআই

জনতা ব্যাংক পিএলসির ৮৬৬তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত