আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ গোপন রেখে নিয়মিত দেখানো হতো। তবে কোনো পরিদর্শক প্রকৃত সত্য প্রতিবেদন দিতে পারতেন না। সরকার পরিবর্তনের পর এ তথ্য ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। খেলাপি ঋণ কীভাবে গোপন রাখা হতো এবং কেন তা ব্যাংক পরিদর্শনে ধরা পড়েনি—এ বিষয়গুলো ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের নজরে এসেছে। তারা ব্যাংক পরিদর্শনপ্রক্রিয়ার ত্রুটি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে আইএমএফ সদস্যরা খেলাপি ঋণ বাড়ার নেপথ্যে কর্মকর্তাদের ভূমিকা ও আইনি দুর্বলতা পর্যালোচনার আহ্বান জানান। বৈঠকে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র, ব্যাংক খাতের তারল্য সংকট ও ঋণ বাড়ার কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে আইএমএফ জানিয়েছে, তাদের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি উল্টো। সরকার পরিবর্তনের পর গোপন করা প্রকৃত তথ্য প্রকাশিত হলে দেখা গেছে, মাত্র এক বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ কোটি থেকে বেড়ে সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকা হয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়েছে আর বেসরকারি খাতে ঋণহার ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকে খেলাপি ঋণ গোপন করার বিষয়টি রহস্যজনক। এতে সিস্টেমের দুর্বলতা বা কারচুপি দুটোরই ভূমিকা থাকতে পারে। যাঁরা ব্যাংক ইন্সপেকশন করেছেন, তাঁরা হয়তো দায়সারা পরিদর্শন করেছেন। আইএমএফ দ্রুত প্রকৃত কারণ জানাতে অনুরোধ করেছে।