আমরা আগেও রমজানে রোজা রাখতাম। নতুন কাপড় কিনতাম। রমজান শেষে সবাই মিলে ঈদের নামাজে যেতাম। সেটা এখনো একই রকম আছে। তবে এখন মানুষ আরও বেশি সক্রিয়। আগে মসজিদে মসজিদে ইফতার দেওয়া হতো না। এখন মসজিদে হাজার হাজার মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করি। আগে এত লোক ওমরাহ করতে যেত না। এখন মানুষ ওমরাহ করছে। মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি ধর্মপ্রাণ হয়েছে। তবে অন্ধবিশ্বাসে নয় বরং পড়াশোনা করছে। হাতের কাছে ইন্টারনেট। কেন ধর্ম পালন করতে হয়, এর পেছনে কী যুক্তি আছে, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও সে সহজে জানতে পারছে।
ছোটবেলায় মা-বাবার সঙ্গে শপিং করতে যেতাম। তখন ছিল গুলিস্তানের রমনা ভবন আর নিউমার্কেট। মাঝে মাঝে কিছু ভালো জামাকাপড়ের জন্য এলিফ্যান্ট রোডে যাওয়া হতো। এখন ঢাকা শহরের মোটামুটি সব জায়গাতেই দোকানপাট গড়ে উঠেছে। যত দিন বাবা-মা বেঁচে ছিলেন, তত দিন তাঁদের জন্য কেনাকাটা করতে যেতাম। এখন তাঁরা কেউ বেঁচে নেই। আর সে রকম ইচ্ছেও নেই। ফলে এখন আর নিজে কেনাকাটা করি না। প্রায় পুরো কেনাকাটা করেন আমার স্ত্রী।
ছোটবেলায় সাধারণত বাবার সঙ্গে বনানী মসজিদে নামাজ পড়তে যেতাম। এখন আমার ছেলে আমার সঙ্গে গুলশান মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে যায়। এই সংস্কৃতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। শৈশবে ঈদের দিনে আমরা সারা দিন ঘুরতাম। আর এখন মেহমানদারি করতে আমাকেই বাসায় থাকতে হয়। এখন আর নিজের ঘোরার সুযোগ নেই। আমরা ঈদের আগের রাতে আতশবাজি ফুটাতাম। সেটা খুব মিস করি। ঈদের দিন সেমাই খাওয়ার চল ছিল। এখন সেমাই আছে, আবার পিৎজা-বার্গারও ঢুকে গেছে।
আলমগীর শামসুল আলামিন, সভাপতি, রিহ্যাব
অনুলিখন: ফারুক মেহেদী।