পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের গুলিতে খুন হয়েছেন নৌকার প্রার্থীর সমর্থক ও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম হোসেন (৩৬)। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর হাটপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম নাজিরপুর হাটপাড়া গ্রামের নুর আলী মোল্লার ছেলে।
শামীম হোসেন পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাসেল আল মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, গত রোববার চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মধু পরাজিত হন। বিজয়ী হন জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আলম হাজী। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তারিকুল আলম ওরফে নিলু খাঁ।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মঞ্জুরুল ইসলাম মধু তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নাজিরপুর হাটপাড়া বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তারিকুল আলম ওরফে নিলু খার ছেলে ইমরান জামায়াত ও শিবিরের বেশ কিছু লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিত গুলি করে পালিয়ে যায়। তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শামীম। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রোকনুজ্জামান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে খবর পেয়েই পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স হাসপাতালে ছুটে যান। নিহতের আত্মীয়দের সান্ত্বনা দেন এবং ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে অনুরোধ করেন।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মধু অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তারিকুল আলমের ছেলে ইমরান হোসেন এবং জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত জাহাঙ্গীর আলম খান ওরফে আলম হাজীর লোকজন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। এ সময় আমার সামনে থাকা কর্মী শামীম গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। এলোপাতাড়ি গুলিতে আমিও মাটিতে শুয়ে পড়ায় প্রাণে রক্ষা পাই।’
পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রোকনুজ্জামান বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। পরে হাসপাতাল থেকে নিহত শামীমের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।