নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের আড়াপাড়া, পশ্চিম বিজয়পুর ও সদর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে বন্য হাতির দল তাণ্ডব চালিয়েছে। গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে ভারত থেকে নেমে আসা হাতির দল গত ৩-৪ দিনে ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বহু জমির ফসল ও বাড়ির ধান খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছে। হাতির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে কেউ খোলা আকাশের নিচে, আবার কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এরই মধ্যে হাতির পায়ের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন পশ্চিম বিজয়পুর গ্রামের এক কৃষক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিন যাবৎ বন্য হাতির দল সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান করছে। সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে লোকালয়ে। বন্য হাতির ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আছেন সীমান্তবর্তী মানুষেরা। না পারছে তাদের ফসল রক্ষা করতে, না পারছে তাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মশাল জ্বালিয়ে ফসল ও বাড়ি ঘর রক্ষার চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু বন্য হাতির আক্রমণের সামনে দাঁড়াতে পারছেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘রাতে হঠাৎ বন্য হাতির একটি দল আমার বাড়িতে ঢোকে। হাতিগুলো আমার বসত ঘরের খুঁটি, বেড়া, ভেঙে তছনছ করে ফেলে। ঘরে থাকা হাঁড়ি-পাতিল, জামা-কাপড়সহ যাবতীয় আসবাবপত্র পিসে নষ্ট করে। তখন ঘরবাড়ি ফেলে তিন সন্তান ও জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যাই আমরা। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে হাতির দল। শুধু তাই নয় ঘরে রাখা চাল ও ধান নষ্ট করেছে। বর্তমানে আমাদের মাথা গোঁজার জায়গাটুকু নেই।’
দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘বন্য হাতির দল ভবানীপুর গ্রামে হানা দিয়েছে গ্রামের প্রায় ২০০-২৫০ মণ ধানের ক্ষতি করেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, ‘ভারতীয় বন্য হাতির দল লোকালয়ে প্রবেশ করে আড়াপাড়া ও পশ্চিম বিজয়পুর, ভবানীপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ফসল, বাড়ি-ঘর ভাঙচুরসহ ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ভেঙে যাওয়া ঘর মেরামতের জন্য ২ হাজার টাকা ও শীতবস্ত্র কম্বল দিয়েছি। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদনের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হবে।’