কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে জমিতে কৃষিকাজ করতে গিয়ে এক যুবক নিজের গলায় হাঁসুয়া চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বাজারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
পরিবার বলছে, দুই মাস ধরে তিনি অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। সে কারণে কয়েক মাস ধরেই তাঁকে সব সময় চোখে চোখে রাখা হতো।
ওই যুবকের নাম সোহেল রানা (২৬)। তিনি ওই গ্রামের এজের বিশ্বাসের ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দীন মোহাম্মদ ও সাইদুর ইসলাম নামের দুজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সকালে আমাদের জমিতে কাজ করছিলাম। আমাদের পাশের জমি সোহেলদের। একটু পরে সোহেল ওদের জমিতে কাজ করতে আসে। সাথে ওর মাও ছিল। কিছুক্ষণ পর সোহেলের মা বাড়িতে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর সোহেল হঠাৎ করেই নিজের গলায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপ দেয়। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সোহেল রক্তাক্ত অবস্থায় নিজের গলা ধরে দৌড়াতে থাকে। কিছু দূর গিয়ে সে একটি ভুট্টাখেতের পাশে পড়ে যায়। পরে আমরাসহ আশপাশের জমিতে কাজ করা লোকেরা সোহেলের বাড়িতে খবর দিই।’
সোহেলের মা যমুনা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমার ছেলে সকালে খাওয়াদাওয়া শেষে মাঠে যায়। আমিও ছেলের সাথে বাজারপাড়ার পশ্চিমের মাঠে যাই। সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে আমি ছেলেকে মাঠে রেখে চলে আসি। পরে শুনতে পাই আমার ছেলে নিজের গলায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে নিয়ে প্রথমে দৌলতপুর হাসপাতালে গেলে উন্নত চিকিৎসা জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। পরে রাজশাহী যাওয়ার পথে আনুমানিক ১১টার দিকে সোহেল মারা যায়।’
যমুনা খাতুন আরও বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু প্রায় দুই মাস যাবৎ সোহেল অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। তার মাথায় সমস্যা হয়েছিল মনে হয়। এ জন্য আমরা তাকে চোখে চোখে রাখতাম।’
সোহেল রানার স্ত্রী চাঁদনী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের সংসারে কোনো ঝামেলা ছিল না। দুই মাস যাবৎ আমার স্বামীর মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে আমরা কোনো চিকিৎসা দেই নাই। সকালে খাওয়াদাওয়া শেষে সে মাঠে চলে যায়। হঠাৎ এলাকাবাসীর কাছে শুনি, আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে।’
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, তিনি কিছুদিন যাবৎ হতাশায় ভুগছিলেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’