দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খুলনার একটি আদালত রপ্তানিকারক দুই ভাইকে ১০ বছর ও এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁদের তিনজনকে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে পৃথক মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ইয়াছিন আলী।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে দুজন হলেন মেসার্স আকবর আলী সন্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. রবিউল হক বিশ্বাস ও তাঁর ভাই ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. শফিউল হক বিশ্বাস। তাঁদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলার অপর আসামি দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার সাবেক অফিসার (অগ্রিম) এস এম ইমদাদুল হককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণাকালে এস এম ইমদাদুল হক আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালতের সূত্র জানায়, পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আকবর আলী সন্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবিউল হক ও তাঁর ভাই চেয়ারম্যান শফিউল হক পরস্পরের যোগসাজশে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড থেকে ৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ টাকা মূল্যের পাট আত্মসাৎ করেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ওই রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ২০০৯-১০ পাট মৌসুমে তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ নেন এবং ক্রয় করা পাট মানিকতলায় ভাড়া করা গোডাউনে রাখেন। আর গোডাউনের চাবি সোনালী ব্যাংকের কাছে সংরক্ষিত রাখা হয়। আর এর তদারকির দায়িত্বে ছিলেন দৌলতপুর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার তৎকালীন অফিসার (অগ্রিম) এস এম ইমদাদুল হক। তিনি ওই গোডাউনে থাকা পাটের আগের স্টক ও নবায়ন করা ঋণসীমার হিসাব রাখতেন। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন কাজ শেষে গোডাউনের চাবি ওই কর্মকর্তার কাছে দিতেন। কিন্তু তাঁরা পরস্পর যোগসাজশে উল্লিখিত পরিমাণ টাকার পাট গোডাউন থেকে সরিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার উপসহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। তাঁদের মধ্যে আসামি সোহেল হোসেন জোয়াদ্দারের মৃত্যু হওয়ায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র আরও জানায়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি রবিউল হক ও শফিউল হকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘোষণাও দেন আদালত।