যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে বিএনপির কর্মিসভা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সভা চলাকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলিশসহ উপস্থিত হয়ে কর্মিসভা বন্ধ করে দেন। যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চান এই কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ইউএনও বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটি যেহেতু স্বাধীনতার পক্ষের; তাই সেখানে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি শোভা পায় না।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে অবহিত করে অডিটোরিয়ামের ভাড়া পরিশোধ করার পরও কেবল রাজনৈতিক কারণে সভা করতে দেওয়া হয়নি। অডিটোরিয়ামে কর্মিসভা না করতে পারলেও পরে অন্যত্র পূর্ব নির্ধারিত এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটির নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির চলমান আন্দোলন ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করতে যশোর নগর বিএনপির প্রতিটি ওয়ার্ডে কর্মিসভা করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে নগর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার আয়োজনে কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। তাতে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হলে হঠাৎ পুলিশ নিয়ে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অনূপ দাশ উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মুল্লুক চান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের অডিটোরিয়ামটি ইজারার মাধ্যমে পরিচালনা হয়। ভাড়া পরিশোধ করে এবং প্রশাসনকে অবহিত করে সেখানে নগর বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ড শাখার কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। কর্মিসভা শুরুর কিছু সময় পর একদল পুলিশ সদস্য প্রথমে গিয়ে কর্মসূচি সম্পর্কে জেনে চলে যায়। কিছু সময় পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আয়োজকেরা ২০ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করবে বললেও ইউএনও সেই অনুরোধ রাখেননি। খবর পেয়ে সেখানে আসেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। পরে তাঁর নির্দেশে পাশেই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ আব্বাস রাজের নিজস্ব কার্যালয়ে কর্মিসভা হয়।
ওই সভায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। সভায় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ আব্বাস রাজের সভাপতিত্বে নগর বিএনপিসহ ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা বক্তব্য দেন। এদিকে প্রশাসন আর বিএনপি নেতাদের মুখোমুখি অবস্থানে এ সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনূপ দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি স্বাধীনতার স্বপক্ষের; তাই সেখানে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি শোভা পায় না। সে কারণে অনুষ্ঠানটি হতে দেওয়া হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওখানে অনুষ্ঠান করতে প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামটি ইজারা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ইজারাদারের কাছ থেকে আমরা অনুমতি নিয়েছি। শহরের ওয়ার্ডে চলমান কর্মসূচি উপলক্ষে আগে থেকেই প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া ছিল। এখন প্রশাসন যদি আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়, তাহলে কী করা যাবে। এটা সুষ্ঠু গণতন্ত্র হতে পারে না। আমাদের কর্মসূচি সব বাধা অতিক্রম করে চালিয়ে যাব। একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার অন্তরায় ছাড়া কিছু না।’