বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার রামনগর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের ছয় মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য ২৬ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশিদা আক্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নুরবানু বেগম অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপনে তাঁর স্বামীকে সভাপতি বানিয়ে নিয়মিত কমিটির জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। কিন্তু অভিভাবকদের আপত্তির মুখে তা অনুমোদন হয়নি। কেন এই কমিটি অনুমোদন হলো না, তা জানতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাঁর নিকটাত্মীয় এক অভিভাবককে দিয়ে আদালতে মামলা করালে সেটি খারিজ হয়। এমন জটিলতায় বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য কমিটি না থাকায় গত আগস্ট মাস থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে।
রামনগর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশিষ কুমার দাস বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উদাসীনতা ও অদক্ষতায় স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। এতে অভিভাবকেরা যেমন স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তেমনি ছয় মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় আমরাও চরম বিপদে পড়েছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরবানু বেগম বলেন, ‘শিক্ষকেরা আমার স্বাক্ষরে বেতন নেবেন না বলে জানিয়েছেন। ইউএনও মহোদয় এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষরে দ্রুত তাঁদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। এই সপ্তাহেই বেতন পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এরই মধ্যে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।’
ইউএনও রাশিদা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ সত্যিই দুঃখজনক বিষয়। দ্রুত সময়ে বেতন-ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করে বিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।’