কুমিল্লার টাউন হল মাঠে একই দিনে বিএনপির দুটি গ্রুপ পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করায় নগরজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মাঠের দুই পাশে দুটি পক্ষ ভিন্ন ভিন্ন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা বিরাজ করেছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় টাউন হল মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব পাশে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের অনুসারীরা দোয়া ও আলোচনা সভার প্রস্তুতি হিসেবে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরিতে ব্যস্ত। একই সময়ে মাঠের পশ্চিম অংশে মনিরুল হক চৌধুরী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী জনসভার জন্য পৃথক মঞ্চ প্রস্তুত করছেন এবং প্যান্ডেল তৈরির সামগ্রী আনা-নেওয়া চলছে। দুই গ্রুপের সমান্তরাল তৎপরতা দেখতে কৌতূহলী জনতা ভিড় জমান। আর মাঠজুড়ে দলীয় কর্মীদের সরব উপস্থিতিও চোখে পড়ে।
বিএনপির অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) টাউন হল মাঠে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের জন্য দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করে হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের গ্রুপ। অন্যদিকে একই দিন একই মাঠে মনিরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ পূর্বনির্ধারিত নির্বাচনী জনসভা করতে চায়। একই স্থানে একই তারিখে দুটি সমাবেশ ডাকায় স্থানীয়ভাবে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সোমবার বিকেলে মনিরুল হক চৌধুরীর নির্বাচনী গণমিছিলকে কেন্দ্র করে নগরীর চকবাজার-কাপড়িয়াপট্টি এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই আবারও একই মাঠে দুই পক্ষের প্রস্তুতি নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা বাড়িয়েছে। যদিও বুধবার পর্যন্ত মাঠে দৃশ্যমান কোনো সংঘর্ষ হয়নি, তবু বৃহস্পতিবারকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
হাজী ইয়াছিন গ্রুপের পক্ষে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হান বলেন, গতকাল ১৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে টাউন হল মাঠ বরাদ্দ চেয়ে আমরা লিখিত আবেদন করি। এর আগে ১৫ নভেম্বর টাউন হলের সদস্যসচিবকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী আমরা দোয়া ও আলোচনা সভার প্রস্তুতি নিয়েছি।
অন্যদিকে মনিরুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত আইনজীবী আবদুল মোতালেব মজুমদার জানান, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৭ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করি। আবেদনের সময় নির্ধারিত ফি পরিশোধও করা হয়েছে।
পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কায় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশাসনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, শুনেছি একই স্থানে দুই পক্ষ অনুষ্ঠান করতে চায়। জননিরাপত্তার স্বার্থে টাউন হলে কাউকে অনুমতি দেওয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে দুই পক্ষকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।