মেঘনা উপজেলার মুগারচর গ্রামে পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রামের শান্তি মিয়া ও চান বাদশা গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারী-শিশুসহ ১৫ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রামজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংঘর্ষের পর গ্রেপ্তার এড়াতে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে শান্তি মিয়া ও চান বাদশার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ও একাধিক মামলা চলছে। এর জেরে গতকাল বিকেলে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন রামদা, লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকেরা পাঁচটি ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের মধ্যে শান্তি মিয়ার দুটি, চান বাদশার দুটি ও ইমান আলীর একটি ঘর রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শান্তি মিয়ার ঘরে ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটও করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন শান্তি মিয়া (৫৫), মোর্শেদা বেগম (৫৫), জান্নাত (৮), রিনা আক্তার (২৫), বাছিনুর বেগম (৬০), ইমান আলী (৭০), জাহাঙ্গীর (৪৫), খুকি আক্তার (২২), মামুন মিয়া (২৮), রফিকুল ইসলাম (৫০) ও জহির উদ্দিন (৩৫)। মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবরিনা বলেন, ‘মারামারির ঘটনায় ১১ জন চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। সবাই চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। আমি রাত ৮টায় দায়িত্ব নেওয়ার কারণে আগে কী ধরনের রোগী এসেছিল, তা বলতে পারছি না।’
তবে গুরুতর আহত মোর্শেদা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্য সবাইকে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমি কুমিল্লায় ছিলাম। খবর পাওয়ার পর এসআই মশিউরকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। শান্তি মিয়া ও চান বাদশার মধ্যে আগের মামলার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
এসআই মশিউর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে কোনো পুরুষ সদস্যকে পাইনি। স্থানীয় নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, পূর্ববিরোধের জেরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। নারী-শিশুসহ ১০-১৫ জন আহত হয়েছে। পাঁচটি ঘর ভাঙচুরের তথ্যও পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।’