ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পুশ ইনের শিকার বহুল আলোচিত ভারতীয় নারী অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তাঁর পরিবারকে মানবিক বিবেচনায় নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর (আইসিপি) এলাকায় আনুষ্ঠানিক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাঁদের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।
বিজিবি জানায়, গত ২৫ জুন বিএসএফ কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ছয়জন ভারতীয় নাগরিককে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশ ইন করে। পরে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রবেশ করলে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে আদালতের নির্দেশে তাঁদের জেলহাজতে পাঠায়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুন ও তাঁর এক নাবালক সন্তানও ছিলেন।
মানবিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত ২ ডিসেম্বর চারজনকে স্থানীয় জিম্মায় মুক্তি দিয়ে কূটনৈতিক উদ্যোগে তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি সদর দপ্তর ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগের ভিত্তিতে গতকাল সোনালী খাতুন ও তাঁর ছেলে সাব্বির শেখকে ফেরত পাঠানো হয়। বাকি চারজন বাংলাদেশে তাঁদের এক আত্মীয়ের জিম্মায় আছেন।
হস্তান্তর শেষে বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিএসএফের এ ধরনের অমানবিক পুশ ইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মানবিক সংকট সৃষ্টি করছে এবং দুই দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করাই ছিল আমাদের প্রধান বিবেচনা। বিজিবি আশা করে, ভবিষ্যতে পুশ ইনের মতো আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করবে বিএসএফ এবং সীমান্ত এলাকায় সৌহার্দ্যপূর্ণ ও মানবিক আচরণ বজায় রাখবে।’