সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে নার্সের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল ৮টার দিকে জগন্নাথপুর নগর মাতৃসদন ও নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় নবজাতকের বাবা জাকির হোসেন থানায় মৌখিক অভিযোগ করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সমশপুর গ্রামের জাকির হোসেন গত শনিবার রাতে তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী মারজানা বেগমকে জগন্নাথপুর নগর মাতৃসদন ও নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। পরদিন রোববার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যাশিশুর জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে শিশুটি সুস্থ ছিল।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে হঠাৎ শিশুটির খিঁচুনি শুরু হয়। বিষয়টি জানানো হলেও তখন কোনো চিকিৎসক শিশুটিকে দেখতে আসেননি। বুধবার সকাল ৮টার দিকে নার্স হেপি দাস শিশুটিকে একটি ইনজেকশন দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
নবজাতকের ফুফু তাসলিমা বেগম বলেন, জন্মের পর শিশুটি ভালোই ছিল। শিশুটির হাতে একটি ক্যানুলা লাগানো ছিল, যার কারণে হাত ফুলে যায়। রাতে খিঁচুনি শুরু হলে বারবার নার্সকে জানানো হলেও ক্যানুলাটি খোলা হয়নি। বরং নার্স তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং কোনো চিকিৎসকও আসেননি। পরে সকালে ইনজেকশন দেওয়ার পর শিশুটি মারা যায়।
নবজাতকের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ‘রাত ২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক আসেননি। সকালে নার্স ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার মেয়ে মারা যায়। আমার মেয়েকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
জগন্নাথপুর নগর মাতৃসদন ও নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহবুব আলম মিজু বলেন, জন্মের পর শিশুটি সুস্থ ছিল। হঠাৎ শিশুর অবস্থার অবনতি হয়েছে—এ বিষয়ে নার্স বা স্বজনদের কেউ তাঁকে অবহিত করেননি। তিনি বলেন, শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় কোনো ত্রুটি হলেও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে নার্সের অবহেলার অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জগন্নাথপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক হাফিজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।