ঢাকা: কোভিড টিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মজুত ব্যবস্থা (স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি) গঠন করতে চায় চীন। আর এতে যোগ দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ উদ্যোগে যোগ দিতে ভারতকেও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অংশ নেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, বাংলাদেশ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পরে বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ‘সাউথ এশিয়া অ্যান্ড চায়না কোভিড ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি’ তৈরি করা হবে যাতে দেশগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী এটি ব্যবহার করতে পারে। ‘পোস্ট কোভিড পভার্টি এলিভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ গড়ে তোলা হবে। এক্ষেত্রে দারিদ্র্য কমাতে দেশগুলো তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। আর ‘ই-কমার্স’–এর মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে নারীদের পণ্য বেচাকেনার প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে চায় চীন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইদানীং একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশগুলো নিজে নিজে সবকিছু করছে। বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতাতে বিশ্বাস করে। কোভিডের সময়ে এক দেশ অপরের সঙ্গে সহযোগিতা ও অংশিদারিত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটিতে জোর দিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চীনের উদ্যোগের এ ফোরামটিতে যোগ দিতে নীতিগতভাবে আমরা সম্মত হয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য যা করা লাগবে আমরা সব করবো। এর আগেও ভারতের নেতৃত্বে সার্ক কোভিড ফান্ডে আমরা যোগ দেই। আমরা এর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজও করি।
চীন এ উদ্যোগে যোগ দিতে ভারতকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে জানান ড. এ কে আবদুল মোমেন।
টিকার সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এতদিন ভারত থেকে টিকা নেয়া হতো। বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টিকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব টিকা সরবরাহের জন্য চীনকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীন।
চীন ও রাশিয়ার টিকা নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যদি অনুমোদন না করে, সেই টিকা আমরা আমাদের দেশে ব্যবহার করতে পারি না।
চীনের নেতৃত্বে গঠিতব্য এ ফোরামে কোনো আর্থিক সহায়তার বিষয় থাকবে কিনা জানতে চাইলে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, এ বিষয়ে চীন কিছু বলেনি। আর আমরাও জানতে চাইনি।
তবে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, জরুরিভিত্তিতে টিকা, মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন, মেডিকেল সরঞ্জাম ইত্যাদির ক্ষেত্রে চীনের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।