রাজশাহীতে চালকের সহকারীর ধাক্কায় চলন্ত বাস থেকে পড়ে গিয়ে এক যাত্রী মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার দুপুরে মারা যান তিনি। এর আগে গত রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী নগরের লিলিহলের বাঁশের আড্ডা এলাকায় একটি বাস থেকে টগরকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রী আলাউদ্দিন ইসলাম টগর (৩৫) রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের কুলপাড়ার আবু সাইদের ছেলে। তিনি একজন কৃষক ছিলেন।
টগরের চাচাতো ভাই আল-আমীন ভুলু জানান, বোন রুমি খাতুনকে বাসে তুলে দিতে গিয়েছিলেন টগর। চালকের সহকারী তাঁদের জানান, বাসে সিট আছে। কিন্তু ভেতরে গিয়ে টগর দেখেন, বাসে কোনো সিট নেই। তখন টগর সুপারভাইজারকে বলেন, ‘আপনারা তো বললেন সিট আছে, কিন্তু একটাও সিট নেই।’ এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চলন্ত বাসে টগরকে মারধর করা হয় এবং পরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।
ভুলু আরও জানান, টগরকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখে বোন রুমি দ্রুত বাস থেকে নেমে আসেন। এ সময় একটি মাইক্রোবাস বাসটিকে থামিয়ে দেয়। পরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা-পুলিশ বাসটি হেফাজতে নেয়।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারী বলেন, সিট আছে বলে যাত্রী তুলে হেলপার-সুপারভাইজার সিট দিতে পারেননি। এরপর তাঁরা উল্টো টগরকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেন। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে নিহত ব্যক্তির ভাই দুলাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। বাসের চালক ও হেলপার পলাতক, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এজাহারে তাঁদের নাম নেই। শনাক্ত করে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পর টগরের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তাঁর দাবি, টগর তাঁর বোনকে বাসে তুলে দিয়ে নামতে দেরি করেন। এর মধ্যে বাস ছেড়ে দেয়। রফিকুল বলেন, ওই যাত্রী নামতে চাইলে হেলপার তাঁকে জানান, এটা টাইমের গাড়ি, সামনে নামিয়ে দেওয়া হবে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির সময় ওই যাত্রী হেলপারকে বাসের ভেতর মারধর করেন। তখন হেলপার বলেন, ‘আপনি আমাকে মারলেন, সামনে কাশিয়াডাঙ্গায় আমাদের মাস্টার আছে, সেখানে চলেন।’ এ কথা শুনে ওই যাত্রী বাস থেকে লাফ দেন।