হোম > সারা দেশ > গাজীপুর

বেতন ছাড়া মহাসড়ক ছাড়তে রাজি নয় শ্রমিকেরা, ৩০ কারখানায় ছুটি ঘোষণা

গাজীপুর প্রতিনিধি

বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের। ছবি: আজকের পত্রিকা

বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে গাজীপুরের টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা। অতীতে কয়েকবার বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কর্তৃপক্ষ কথা না রাখায় বেতন ছাড়া মহাসড়ক না ছাড়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

অপরদিকে, নিরাপত্তা ও অন্যান্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গাজীপুরের ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ রোববার দুপুরে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকেরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান করছে। তাদের একটাই কথা, বেতন না পাওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক ছাড়বে না।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। পরে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি। বারবার সময় দেওয়ার পরও বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রমিকেরা এখন আর কারও কথা আর বিশ্বাস করে না।

শ্রমিকদের অবরোধের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে রোববার সকালে লাঠিসোঁটা হাতে কিছু বহিরাগত যোগ দিয়েছে। শ্রমিকদের অবরোধের জায়গার উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটে আটকে পড়া যানবাহনের মধ্যে বেশির ভাগই পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের গাড়ি। এসব গাড়ি গত রাতে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে যানজটে আটকা পড়ায় আর কোনো দিকে যেতে পারেনি। আটকে পড়া পণ্যবাহী যানবাহনে পচনশীল পণ্যও রয়েছে।

পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় আমরা কোনো মুখে ওদের বলব, তোমরা আন্দোলন প্রত্যাহার কর, তোমাদের একটা ব্যবস্থা আমরা করে দিব। শ্রমিকদের মতোই মালিকের প্রতি আমাদেরও আস্থা নেই। যে কারণে ওরা গতকাল থেকে বসে আছে। আমরা তাদের একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, আমাদের অফিসে এসে বসো। কিন্তু ওরা নাছোড়বান্দা। মহাসড়ক ছাড়বে না। এটাকে কেন্দ্র গতকাল সন্ধ্যায়ও ওদেরকে বোঝানো হয়েছে, রাতেও চেষ্টা করেছিলাম, ওরা যায়নি। আজকে তারা আছে। এই ধারাবাহিকতায় এ এলাকায় ৩০টি কারখানা ছুটি দিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা ভেতরে ঢুকতে পারছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবারও চেষ্টা করছি। একটু আগে সেনাবাহিনী এসেছিল, আমরাসহ কথা বলেছি। আশা করি এটার সমাধান হবে। এটা নিয়ে আমাদের সিনিয়র স্যাররা আছেন, বিজিএমইএ, শ্রম অধিদপ্তর কাজ করছে।’

মহাসড়কের ওপরের কেন এত ক্ষোভ? এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ধারণা, ওরা মনে করে মহাসড়ক বন্ধ করতে পারলে মালিকের ওপর চাপ আসে, টাকার ব্যবস্থা করতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান দুজন মালিক। বর্তমানে একজন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যিনি দেশে আছেন তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়ে বসে আছেন। যেখানে এক্সপোর্ট বিল্ড আপ ফান্ড আছে। এখানে ওনার কিছু টাকা আছে। ওই টাকা ব্যবস্থা করে দেওয়া হলে, এই দুই মাসের বেতনের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া শ্রমিক আন্দোলন রাতভর চলছিল। টানা প্রায় ২৮ ঘণ্টা মহাসড়কে শ্রমিকেরা অবস্থান করে অবরোধ তৈরি করে রেখেছে শ্রমিকেরা। এ কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে টঙ্গী থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া এ যানজট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কোনাবাড়ী ছাড়িয়েছে। যানজটে আটকা পড়ে মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা বিকল্প পথে চলাচল করছে। এ ছাড়াও, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বিকল্প সড়ক ব্যবহারে অনুরোধে করে একটি ট্রাফিক আপডেট দেওয়া হয়েছে।

যানজটের দুর্ভোগ এড়াতে মহানগর পুলিশ বিকল্প পথ বলতে আসলে কোনো পথ ব্যবহারের কথা বলেছেন, এ নিয়ে অনেকেই জানতে চেয়েছেন। মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সড়কের বিকল্প হিসেবে বেশ কয়েকটি সড়ক ও উপসড়ক রয়েছে। ময়মনসিংহ থেকে বা টাঙ্গাইল থেকে যে গাড়িগুলো আসছে সেগুলোকে ভোগড়া থেকে ডাইভারশন দিচ্ছেন যেন ঢাকা বাইপাস হয়ে, কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে বা তিন শ ফিট হয়ে ঢাকায় যেতে পারে। অপরদিকে, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহমুখী গাড়িগুলো টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে মীরের বাজার দিয়ে ঢাকা বাইপাস হয়ে আসতে পারে।

সূত্র আরও জানায়, যে সব যাত্রী টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা যাচ্ছেন অথবা ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে পথে যাত্রা করছেন তারা চাইলে, গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ প্রান্তে তুরাগ নদীর দক্ষিণ পাশ দিয়ে টঙ্গী-আশুলিয়া-চন্দ্রা সড়ক ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ময়মনসিংহ এলাকার লোকজন, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর রেলস্টেশন পেরিয়ে ধীরাশ্রম-বনমালা হয়ে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকা দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যুক্ত হতে পারেন।

তবে, জয়দেবপুর-ধীরাশ্রম-বনমালা সড়কটি সরু হওয়ায় বড় বড় যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন জয়দেবপুর রাজবাড়ী রোড দিয়ে ধীরাশ্রম অতিক্রম করে বাইপাস আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে পুবাইল হয়ে ৩০০ ফিট দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারেন

এ ছাড়াও যাত্রীরা চাইলে জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে ঢাকা আসা-যাওয়া করতে পারেন বলেও জানানো হয়।

গাইবান্ধায় এনসিপির আহ্বায়ক হলেন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা

মুন্সিগঞ্জ-৩: প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সেতু অবরোধ

ঋণের টাকা শোধ না করায় গুলি করে হত্যা করা হয় রফিককে, গ্রেপ্তার ১

দাবি পূরণে প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট হবে: ৮ দলের সমাবেশে জামায়াত আমির

অভিযোগের পাহাড় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

কর্ণফুলীতে অস্ত্রসহ যুবক আটক