ফরিদপুরে সুরক্ষা প্রাইভেট হাসপাতালে কর্মচারীকে দিয়ে এক নারীর অস্ত্রোপচারের ঘটনায় হাসপাতালটি বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার নাঈমের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালের ক্লিনার (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) নিয়ামুলকে দিয়ে অস্ত্রোপচার করা ও অপারেশন থিয়েটারের ফ্রিজ বন্ধ থাকা এবং ভেতরে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়ার কারণে হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।
হাসপাতালটিতে কর্মচারীকে দিয়ে নারীর অস্ত্রোপচারের ঘটনায় আজ আজকের পত্রিকায় ‘অস্ত্রোপচারে ওটির কর্মচারী, অঙ্গ হারালেন নারী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। হাসপাতালটি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ফটকের বিপরীতে অবস্থিত।
জানা গেছে, হাসপাতালটিতে গত ১৮ নভেম্বর স্তনের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে যান জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি গ্রামের সৌদিপ্রবাসী সরোয়ার আলমের স্ত্রী ববিতা বেগম (২৮)। চিকিৎসক তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাধ্যমে বায়োপসি পরীক্ষার কথা বলেন। তিনি চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর হাসপাতালটির ওটি কক্ষের দায়িত্বে থাকা নিয়ামুল শেখ (নিয়োগপত্র অনুযায়ী ক্লিনার) তাঁকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মেডিকেলে যেতে নিষেধ করেন এবং নিজেই করতে পারেন বলে জানান। পরে তাঁর কথা অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অস্ত্রোপচার করে স্তনের টিস্যু সংগ্রহ করেন।
ভুক্তভোগী নারী ববিতা বেগম জানান, অপারেশন শেষে চারটি সেলাই দেন এবং নিয়ামুল নিজেই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। এ ঘটনার ১৫ দিন পর অস্ত্রোপচারস্থলে মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে ৪ ডিসেম্বর ফরিদপুর সেন্ট্রাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসকের মাধ্যমে তাঁর সংক্রমিত স্তনের অধিকাংশ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন আছেন।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মাহামুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মচারীকে দিয়ে এক নারীর অস্ত্রোপচারের ঘটনায় ডেপুটি সিভিল সার্জন বদরুদ্দোজা টিটোকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।