হোম > বিশ্লেষণ

ফিলিস্তিনে কি দ্বিতীয় নাকবা শুরু

অধিকৃত গাজা থেকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলে নজিরবিহীন রকেট হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলার প্রথম মুহূর্তেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই প্রতিশ্রুতি প্রায় পুরোপুরিই মনোযোগ এড়িয়ে গেছে বৈশ্বিক পরিসরে।

ওই দিন নেতানিয়াহু দক্ষিণ সীমান্তবর্তী শহরগুলোর মেয়রদের উদ্দেশে বলেছিলেন, মধ্যপ্রাচ্য বদলে দেবে ইসরায়েল। তিনি হামাসের অতর্কিত হামলায় হতবিহ্বল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও একই কথা বলেছিলেন, ‘সামনের দিনে আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যা যা করব, তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে প্রতিধ্বনিত হবে।’

নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে চাইছিলেন। তিনি হিজবুল্লাহ ও হামাসকে নির্মূল করতে চান, যে দুটি সংগঠনকে তিনি ইরানের এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

গত শনিবার হামাসের হামলার পর নেতানিয়াহুর কথায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নাইন-ইলেভেন হামলা-পরবর্তী প্রক্রিয়ার ছায়া দেখা গেছে।

অন্যদিকে আফগানিস্তানে আল-কায়েদা প্রবেশের পর সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি বলেছিলেন, সিংহাসনের পেছনের শক্তি আগেই ইরাকে আরও বড় হামলার কথা ভেবেছিল। নেতানিয়াহুর কথায় ওই দুজন মার্কিন নেতার সুস্পষ্ট ছায়া দেখা যাচ্ছে।

গাজা পুনরুদ্ধার করা এবং কেবল একটি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে শেষ করা এই অঞ্চলের কৌশলগত বাস্তবতা বদলে দেবে না। আর গাজা পুনরুদ্ধার করতে ৩ লাখ ৬০ হাজার সদস্যের সংরক্ষিত সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুসারে, হামাসের সর্বোচ্চ ৬০ হাজার সশস্ত্র লোক আছে। তাদের সঙ্গে অন্য উপগোষ্ঠী যোগ হলেও সংখ্যায় তা বড়জোর ইসরায়েলি বাহিনীর মাত্র এক-তৃতীয়াংশ হবে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এটা নেতানিয়াহুর বক্তৃতার একটা খুবই সাধারণ ধরন হতে পারে, যা তিনি আগেও ব্যবহার করেছেন। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ছাড়াও আগের ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা প্রায়ই মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তা বরাবরই ফাঁপা বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিমন পেরেজ একটা বই লিখেছিলেন। তাতে তিনি তুলে ধরেছিলেন, অসলো কীভাবে মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন আকার দেবে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসও একটি ‘ভিন্ন মধ্যপ্রাচ্যের’ দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন, যখন তিনি ২০০৬ সালে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর ১১ দিনের বোমা হামলার পর ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। 

তবে এখন প্রশ্ন হলো, নেতানিয়াহু যে বড় উদ্যোগের পরিকল্পনা করছেন, তাতে কী কী থাকবে এবং পুরো অঞ্চলের জন্য তা কতটা ঝুঁকি তৈরি করবে?

এ প্রশ্নের প্রথম ও সুস্পষ্ট উত্তর হলো, দ্বিতীয় নাকবা বা গাজার ২৩ লাখ মানুষের গণবিতাড়ন।

এদিকে হামাসের হামলার পর সীমান্ত বন্ধ বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। সীমান্ত বন্ধ থাকলে এত মানুষ কীভাবে অন্যত্র যাবে, এ প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার ইসরায়েলি লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচ্ট বিদেশি সাংবাদিকদের বলেছেন, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তিনি মিসরের সীমান্তবর্তী গাজার দক্ষিণ সীমান্তের রাফা ক্রসিং দিয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গাজা থেকে উদ্বাস্তুদের আগমনের অনুমতি দিতে মিসরকে বাধ্য করা হতে পারে, যা ১৯৪৮ ও ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পরে হয়েছিল।

নাকবা একটি আরবি শব্দ। ধারণাগতভাবে ফিলিস্তিনি আরব জনগোষ্ঠীকে নিজ ভূখণ্ড থেকে জোরপূর্বক বিতাড়নকে নাকবা বলা হয়। এটা মূলত প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়ে। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, ওই সময় অন্তত সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে বিতাড়ন করা হয়েছিল।

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!

কোন দেশে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য সর্বাধিক, বাংলাদেশের চিত্র কেমন

যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা দক্ষ ইতালির জঙ্গি বিমান ইউরোফাইটার টাইফুন

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত থামেনি, ট্রাম্প ‘থামিয়েছেন’ দাবি করা অন্য যুদ্ধগুলোর কী অবস্থা