কয়েক মাসের মধ্যেই উত্তর গোলার্ধে শুরু হবে শীতের মৌসুম। এ নিয়ে তৃতীয়বার শীত পার করছে করোনাভাইরাস। শীতকালেই ভাইরাসটি সংক্রমণ বিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ পায়। এবারও ব্যাপক ঢেউ আসতে পারে কোভিড-১৯-এর। শীত শুরু হওয়ার আগেভাগেই তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এবার ওমিক্রনের নতুন উপ-ধরন কেমন হবে এ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।
এবারের শীতে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই একদিনে করোনা আক্রান্ত হতে পারেন ১০ লাখ মানুষ। সংখ্যাটি বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। মহামারি নিয়ে কাজ করা ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র শাখা ইনস্টিটিউট অব হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভল্যুশনের (আইএইচএমই) প্রধান ক্রিস মুরে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের অন্যান্য দেশে সংক্রমণের কয়েকটি ঢেউ দেখা যেতে পারে। কারণ শীতকালে বেশির ভাগ সময় মানুষ ঘরেই থাকে এবং এ সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কিংবা মাস্ক পরার বিষয়টি পাত্তাই দেওয়া হয় না। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা আসলে এখানেই। তবে ভরসার কথা হলো, এবার সংক্রমণ বেড়ে গেলেও হাসপাতালে যাওয়া রোগী কিংবা মৃত্যুর সংখ্যা নাও বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার টিকা, দেহে অ্যান্টিবডি, কার্যকর চিকিৎসা এবং ভাইরাসটির দুর্বল ধরনের কারণে এবারের শীতে এতটা ভয়াবহ হবে না।
এবার নতুন প্রশ্ন সামনে এসেছে, মহামারি থেকে কবে মুক্তি মিলবে? ঠিক করে এর উত্তর দেওয়া না গেলেও আরও কয়েক বছর মৌসুমি রোগ হয়ে করোনা থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ক্রিস মুরে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের মহামারিবিদ অ্যাডাম কুচারস্কির মতে, ‘মহামারি শেষ হয়ে গেছে, এ ধারণা একপাশে রেখে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। তবে নতুন ধরনের দিকে রাখতে হবে বিশেষ নজর।’
এদিকে, ঘরে বসে করোনা পরীক্ষার রীতি বেড়ে যাওয়ায় এখন বিশ্বের মোট শনাক্ত নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। এ কারণে করোনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা বেশ কঠিন বলে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ বিজ্ঞানী। নতুন কোনো ধরন কিংবা উপ-ধরন এলে অবস্থা কেমন হবে তা অনুমান করা যাচ্ছে না।
এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রতি শনাক্ত হওয়া করোনার সঙ্গে যুক্ত একটি ফ্লু ধরা পড়েছে। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার শীতে পশ্চিমা দেশগুলোতেও এমন কোনো ফ্লু দেখা দিতে পারে।