হোম > বিশ্লেষণ

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধ কি আসন্ন

ইসরায়েল এবং ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গেরিলাদের মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তাদের সামরিক প্রচেষ্টার একটি ‘নতুন পর্যায়’ ঘোষণা করেছেন এবং উত্তর সীমান্ত লেবানন সীমান্তে তৎপরতা বৃদ্ধি করেছেন। লেবাননে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহৃত পেজার ওয়াকি-টকিতে একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনা এই প্রচেষ্টারই অংশ বলে মনে হচ্ছে। গত মঙ্গল ও বুধবার দুই ধাপের এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। এ অবস্থায় ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। 

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলা এখনো অব্যাহত রেখেছে। তবে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই লেবানন-ভিত্তিক হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সঙ্গেও বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল। তবে এই সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষই সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়িয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে ওয়াশিংটন টাইমসের এক নিবন্ধে আশঙ্কা করা হয়েছে—বিগত বছরটিতে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ সংঘটিত না হলেও এই পরিস্থিতি এখন বদলে যাচ্ছে। বিশেষ করে, লেবাননে অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক হামলার পর সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা আরও তীব্রতর হয়েছে। সর্বশেষ দুই ধাপের এই ইলেকট্রনিক হামলায় লেবাননে থাকা হিজবুল্লাহ সদস্যদের ব্যবহৃত পেজার এবং ওয়াকি-টকি বিস্ফোরিত হয়ে কমপক্ষে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। এই ঘটনার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ইসরায়েলি সামরিক নেতারা মত দিয়েছেন, ইসরায়েল এখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। উত্তর সীমান্তে দেশটির সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি এই চিন্তাকে আরও জোরালো করেছে। 

উত্তর তথা লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি শক্তিশালী ডিভিশনকে একত্রিত করেছে। এই ডিভিশনের সৈনিকেরাই আগে গাজায় যুদ্ধ করেছে। এই অভিজ্ঞতা লেবাননের সীমান্তে বাহিনীটির সক্ষমতাকে শক্তিশালী করেছে। 

ওয়াশিংটন টাইমসের নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে—ইসরায়েলের সাধারণ মানুষও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে। সাম্প্রতিক কিছু জরিপে দেখা গেছে, হিজবুল্লাহ প্রশ্নে বেশির ভাগ ইসরায়েলি উত্তরদাতারা তীব্র সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। তাঁরা চাইছেন হিজবুল্লাহর বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি হয়ে যাক। 

ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই শত্রুভাবাপন্ন অবস্থান বিরাজ করছে। মুখোমুখি এই অবস্থানের কারণে দুই পক্ষেই অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই হিজবুল্লাহ সদস্য। হিজবুল্লাহদের হামলায় ইসরায়েলেও অনেক প্রাণহানি এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজক পরিস্থিতি ২০০৬ সালের সংঘাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সেবার দুই পক্ষের মধ্যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর হিজবুল্লাহ গেরিলারা তাদের নিরাপত্তার জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রকেট এবং উন্নত ড্রোনের মজুত গড়েছে। বেড়েছে তাদের সামরিক সক্ষমতাও। 

এই অবস্থায় যদি কোনো কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছানো না যায়, তবে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে আরেকটি বড় সংঘাত আসন্ন বলে মনে হচ্ছে।

‘ভেনেজুয়েলা সংকট’ কীভাবে আন্তর্জাতিক সংঘাতের রূপ নিচ্ছে

ভেনেজুয়েলার তেল আমাদের সম্পদ—ট্রাম্প প্রশাসনের এই দাবি কি যৌক্তিক

চীন চাইলে এক দিনেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে, কিন্তু কীভাবে

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!