হোম > বিশ্লেষণ

এনডিটিভির বিশ্লেষণ

জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগ: কানাডার অভিবাসন নীতি ও ভারত-কানাডা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর। ছবি: এএফপি

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে জাস্টিন ট্রুডোর সরে দাঁড়ানো কানাডার রাজনীতিতে এক নতুন মোড় এনে দিয়েছে। প্রায় এক দশকের শাসনামলে উচ্চাভিলাষী অভিবাসন নীতি ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সমালোচনায় বরাবরই আলোচনায় ছিলেন ট্রুডো। তাঁর পদত্যাগের পর কানাডার রাজনীতিতে কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পোলিয়েভরের নেতৃত্বের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পোলিয়েভর ইতিমধ্যে অভিবাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা বিদ্যমান নীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে ইন্ডিয়ান-কানাডীয়দের মধ্যে ট্রুডোর পদত্যাগ নিয়ে ‘মিশ্র প্রতিক্রিয়া’ দেখা গেছে। টরন্টোর একটি টেক ফার্মের ব্যবসা ও পণ্য কৌশল ব্যবস্থাপক সুরজ সুভদর্শি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ‘তাঁর (ট্রুডো) পদত্যাগের ব্যাপারটি আমার কাছে মিষ্টি, আবার তেতো। অভিবাসন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও বৈদেশিক সাহায্যের বিষয়ে তাঁর কিছু নীতি আজকের এ দিনটি নিয়ে এসেছে।’

সুরজ সুভদর্শি আরও বলেন, ‘অভিবাসন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ; তবে এটির নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। অতিরিক্ত অভিবাসন দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন বলেন, ‘যদিও তিনি উদারপন্থী, কিন্তু তাঁর সরকারের নীতি অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে।’

ট্রুডোর সরকারের অভিবাসন নীতি প্রাথমিকভাবে প্রশংসিত হলেও তা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তিনি ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ লাখ স্থায়ী বাসিন্দা নিয়ে কানাডার শ্রম ঘাটতি পূরণ এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ভারসাম্য রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। তবে সমালোচকেরা মনে করেন, ট্রুডোর এ পরিকল্পনার কারণে কানাডার আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য গণপরিষেবার ওপর চাপ পড়েছে।

ভারত-কানাডা সম্পর্ক
ট্রুডোর পদত্যাগের পর ভারত-কানাডা সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কানাডায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ করেন ট্রুডো। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে। তবে অনেক ইন্ডিয়ান-কানাডীয় আশা করছেন, নতুন নেতৃত্বে সম্পর্কের উন্নতি হতে পারে।

সুরজ সুভদর্শি বলেন, ‘নতুন সরকার ভারত-কানাডা সম্পর্ক মেরামতের দিকে মনোযোগ দেবে বলে আশা করি। তবে অভিবাসন নীতি আরও কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

২০২৩ সালে জি—২০ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো ও ভারতের প্রধানমন্দ্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএফপি

কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পোলিয়েভর ট্রুডোর অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি অভিবাসন সীমিত করে বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও চাকরি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে পরিকল্পনা করার প্রস্তাব দেন।

সুরজ সুভদর্শি এনডিটিভিকে বলেন, ‘পোলিয়েভরের নেতৃত্বের ওপর আস্থা রাখি। আমি মনে করি, কনজারভেটিভদের সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে।’

কেউ কেউ এ পরিবর্তন নিয়ে সন্দিহান। কানাডার আরেকটি টেক ফার্মের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ঋতুরাজ গৌরভ বলেন, ‘তিনি ভালো না-ও হতে পারেন, কিন্তু আমাদের হাতে বিকল্প কম।’

ট্রুডোর পদত্যাগ কানাডার রাজনীতিতে একটি নতুন দিক উন্মোচিত করেছে। এটি কানাডার অভিবাসন নীতি ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের সুযোগ হতে পারে। তবে এ পরিবর্তন বাস্তবায়নের জন্য নতুন নেতৃত্ব কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে, তা সময় বলে দেবে।

দোনেৎস্ক: শান্তি-আলোচনার টেবিলে পুতিন-জেলেনস্কির অন্তিম বাধা, এর গুরুত্ব কতটা

কী হবে, যদি বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ কেড়ে নেওয়া হয়

জাপানের ‘লৌহমানবী’ কি দেশকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন

পুতিন-মোদির আসন্ন বৈঠকের মূলে কী আছে

শাহেনশাহ-ই-পাকিস্তান: আসিম মুনিরের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠার স্বপ্ন কি তাসের ঘর

যে ইমরান খানকে আমি চিনতাম—শশী থারুরের স্মৃতিকথায় আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলার উত্তেজনায় রাশিয়া ও চীন কেন নীরব

দুবাইয়ে তেজস দুর্ঘটনা: সামনে আসছে ভারতের যুদ্ধবিমান কর্মসূচির পুরোনো দুর্বলতা

হাসিনার ভাগ্যে কী আছে

ইমরানকে সরানোর খেসারত: পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর নীরব অভ্যুত্থান, দেশ শাসনের নয়া মডেল