হোম > বিশ্লেষণ

এমকিউ-৯ রিপার: বিধ্বস্ত ড্রোন নিয়ে জানার আছে যা যা

রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের মনুষ্যবিহীন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন বিধ্বস্তের ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। আলোচিত এই এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন কি এবং তা কীভাবে কাজ করে তা যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষ্ণসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন বিধ্বস্তের ঘটনা ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। সাধারণত যুদ্ধাঞ্চল কিংবা এর আশপাশে মনুষ্যবিহীন ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী অসংখ্য মনুষ্যবিহীন ড্রোন ব্যবহার করে থাকে, এর মধ্যে এমকিউ-৯ রিপার সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত। 

এমকিউ-৯ রিপার বড় আকৃতির ড্রোন। ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক জেনারেল অ্যাটমিক্স এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। দুজনের একটি দল ড্রোনটি দূরবর্তী স্থান থেকে পরিচালনা করে থাকে। একজন পাইলট ও একজন এয়ারক্রু সদস্য, যিনি সেন্সর ও অস্ত্র পরিচালনা করেন। এটি দৈর্ঘ্যে ১১ মিটার ও প্রস্থে ২২ মিটার। 

মার্কিন বিমানবাহিনী বলছে, সাধারণত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও নজরদারির কাজে এই ড্রোন ব্যবহৃত হয়। এটি ১৬টি হেলফায়ার মিসাইল বহনে সক্ষম। এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনটিও অন্যান্য মনুষ্যবিহীন আকাশযানের মতো ৫০ হাজার ফুট (১৫ কিলোমিটার) ওপরে উড়তে পারে। ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন ৩ লাখ ২৫ হাজার ঘণ্টা উড্ডয়ন করেছিল, যার ৯১ শতাংশই ছিল যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট। 

ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের (বিআইজে) তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় ৫৭টি ড্রোন হামলা চালানো হয়। পরবর্তীতে বারাক ওবামার দুই মেয়াদে পাকিস্তান, সোমালিয়া এবং ইয়েমেনে ৫৬৩টি ড্রোন হামলাসহ মোট ১ হাজার ৮৭৮টি ড্রোন হামলা চালানো হয়। বিআইজের ধারণা, এসব হামলায় কয়েক শ বেসামরিক লোক নিহত হন। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দুই বছরেই ২ হাজার ২৪৩টি ড্রোন হামলা চালানো হয়। 

মার্কিন কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত রিপার ড্রোনের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ২০০৭ সাল থেকে ৩৬৬টি রিপার ড্রোন কিনতে চুক্তি করেছে দেশটির বিমানবাহিনী, যার গড় খরচ ২৮ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্যও রিপার ড্রোনের বড় ক্রেতা। ২০১৪-২০১৮ সালের মধ্যে সিরিয়া এবং ইরাকে ২ হাজার ৪২৩টি রিপার ড্রোন পরিচালনা করেছে যুক্তরাজ্য, আঘাত হেনেছে ৩৯৮ বার। 

ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, ভারত, জাপান এবং নেদারল্যান্ডসও রিপার ড্রোন পরিচালনা করে থাকে। এছাড়া ভিন্ন ডিজাইনে, নিজস্ব প্রোগ্রামে পাকিস্তান এবং তুরস্ক মনুষ্যবিহীন ড্রোন পরিচালনা করে। তুরস্ক তাঁর নিজ দেশে এবং উত্তর ইরাকে কুর্দি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ড্রোন ব্যবহার করে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, নাইজেরিয়া, সৌদি আরব এবং ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে নিজস্ব ড্রোন সরবরাহ শুরু করেছে চীন, তবে দেশগুলো এখনো মনুষ্যবিহীন ড্রোন পরিচালনা শুরু করেনি। 

গতকাল মঙ্গলবার কৃষ্ণসাগরে মার্কিন ড্রোনের সঙ্গে রুশ যুদ্ধবিমানের সংঘর্ষ হয়েছে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী। মার্কিন সামরিক বাহিনীর দাবি, রুশ জেটের সঙ্গে মনুষ্যবিহীন মার্কিন ড্রোনের সংঘর্ষের পর ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। 

তবে এক বিবৃতিতে রাশিয়া বলেছে, কৌশলে মহড়া দিতে গিয়েই মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রুশ যুদ্ধবিমান কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেনি কিংবা ড্রোনটির সংস্পর্শেও আসেনি। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে ড্রোনটি শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানায় মস্কো। 

এ ঘটনায় ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তলব করার পর রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভ সাংবাদিকদের জানান, যা ঘটছে, তা বিবেচনায় নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন আমিনুল ইসলাম নাবিল

‘ডেথ সেলে’ ইমরান খান—ক্রিকেট বিশ্বের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইরান ও ইসরায়েলে সমানতালে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি

পাকিস্তানকে এফ-১৬ আধুনিকীকরণের প্যাকেজ, ভারতকে কী বার্তা দিতে চান ট্রাম্প

ডার্ক ফ্লিট: নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেভাবে চলে ইরান ও ভেনেজুয়েলার তেল পাচার

এআই চাকরি কেড়ে নিচ্ছে আমেরিকায়, কিন্তু নিয়োগ বাড়াচ্ছে ভারতে—কীভাবে

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ না সম্ভাবনা

শত বছর আগে জাপানের কাছে হারের বদলা চান সি চিন পিং!

কোন দেশে সম্পদ ও আয়ের বৈষম্য সর্বাধিক, বাংলাদেশের চিত্র কেমন

যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা দক্ষ ইতালির জঙ্গি বিমান ইউরোফাইটার টাইফুন

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত থামেনি, ট্রাম্প ‘থামিয়েছেন’ দাবি করা অন্য যুদ্ধগুলোর কী অবস্থা