হোম > আড্ডা

আন্নার আকাঙ্ক্ষা

আন্না তড়খড়

আন্না মানুষ হয়েছিলেন বিলেতে। বুদ্ধিমান ঝকঝকে মেয়ে। চমৎকার ইংরেজি বলেন। রবীন্দ্রনাথের বয়স তখন সতেরো। বিলেতে যাবেন, তারই তোড়জোড় চলছে। লাজুক, ঘরকুনো ছেলেটাকে তো বিদেশি রীতিনীতি শিখতে হবে। এরই মধ্যে রবীন্দ্রনাথ পড়ে ফেলেছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘বিষবৃক্ষ’। ফলে রোমান্সের সঙ্গে যোগাযোগ একটা গড়ে উঠেছে, কিন্তু ভয় ঘোচেনি, আড়ষ্টতা যায়নি।

মেজ ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঠিক করলেন, বিলেতে যাওয়ার আগে রবিকে পাঠাতে হবে বোম্বের (এখন মুম্বাই) তড়খড় পরিবারে। সেখানেই রবি পাবেন ইংরেজির তালিম।  সুঠাম রবীন্দ্রনাথকে দেখে ভালো লেগে গেল পরিবারের ছোট মেয়ে আন্না তড়খড়ের। রবীন্দ্রনাথই লিখেছেন, ‘আমার সঙ্গে প্রায়ই সে যেচে মিশতে আসত। কত ছুতো করেই যে সে ঘুরত আমার আনাচে-কানাচে।’ আন্না তড়খড় রবীন্দ্রনাথের প্রশংসা করতেন। তাঁর লেখার, তাঁর চেহারার।

আন্না রবির চেয়ে বয়সে একটু বড় ছিলেন। রবি ইংরেজি কতটা শিখলেন, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ, কিন্তু আন্না শিখে নিলেন বাংলা। বাংলা কবিতা, বাংলা গানে তিনি মজে যান।একদিন আন্না এলেন রবীন্দ্রনাথের আড়ষ্টতা ভাঙাতে। নিভৃত কক্ষে সেদিন তিনি আর রবীন্দ্রনাথ ছাড়া কেউ ছিল না। একটি বিদেশি উপাখ্যান শুনিয়ে আন্না বললেন, ‘জানো রবি, ঘুমে অচেতন কোন কুমারীর ঘুম না ভাঙিয়ে যদি কেউ তার হাতের দস্তানা চুরি করে নিতে পারে, তাহলে তাকে চুম্বন করার অধিকার সেই পুরুষের জন্মায়।’

আন্নার কথায় বিচলিত হন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু আন্না হঠাৎ একজোড়া দস্তানা বের করে রবীন্দ্রনাথের চোখের সামনে নাচতে নাচতে সেখানেই শুয়ে পড়েন।

রবীন্দ্রনাথ বুঝতে পারেন আন্না আসলে কী চাইছেন। আন্না ঘুমের ভাণ করে আছেন। রবীন্দ্রনাথের মনও চঞ্চল হয়ে উঠেছে। কিন্তু দস্তানা খুলে নেওয়ার সাহস আর হয়নি। বোকার মতো তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন আন্নার সামনে। আন্না বুঝতে পারেন অভিসার বৃথা, ধিক্কার দেন কবিকে। 

সূত্র: অমিতাভ চৌধুরী, একত্রে রবীন্দ্রনাথ, পৃষ্ঠা ১২১–১২৫ 

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার