হোম > আড্ডা

আমার জন্য কী রেখে গেলেন

দিদি সুচরিতার সঙ্গে ভাব ছিল বলে বন্ধুবান্ধবসহ ভূমেন্দ্রের অধিকার ছিল ভাই জীবনানন্দ দাশের কাছাকাছি হওয়ার। দিদির সঙ্গে গেলে ঘরে বসার অনুমতি মিলত। একা গেলে দুই হাত ছড়িয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কথা বলতেন। ভেতরে ঢুকতে দিতেন না। ভূমেন্দ্ররা ‘ময়ুখ’ সাময়িকীর জন্য কবিতা চাইতেন।

ট্রাম দুর্ঘটনাটা হয়েছিল বালিগঞ্জে,  ১৯৫৪ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায়। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ছিলেন জীবনানন্দ। ১৫ অক্টোবর সকালে ভূমেন্দ্র গুহ গেলেন সেখানে।

কয়েকজন ডাক্তারি পড়া ছেলে ছিল সামনে, তাঁর পাশে রাত জেগেছেন ভূমেন্দ্ররা, ওষুধপথ্য খাইয়ে দিয়েছেন। সঞ্জয় ভট্টাচার্যের চিঠি তারাশঙ্কর, সজনীকান্তের কাছে নিয়ে যাওয়া, বিধানচন্দ্র রায়কে দিয়ে চিকিৎসাপদ্ধতি রোগীর অনুকূলে আনার চেষ্টা করেছেন সবাই মিলে।

জ্বর এলে কত মানুষের সঙ্গে যে তখন কথা বলতেন জীবনানন্দ। তার বেশির ভাগটাই বোঝা যেত না। এভাবেই এল ২২ অক্টোবর। খুব দুর্বল। দিদি বললেন, ‘ভাবছ কেন? আজ তুমি ভালো আছ। জ্বর নেই।’

জীবনানন্দ বললেন, ‘তাই বুঝি! হবে হয়তো!’ সে রাতেই মারা গেলেন জীবনানন্দ দাশ।

শবদেহ নিয়ে আসা হলো অশোকানন্দ-নলিনী দাশের দোতলার ফ্ল্যাটে। বিখ্যাত-অখ্যাত কবি-সাহিত্যিকেরা ভিড় জমিয়েছেন সেখানে।

খুব সকালে সবার আগে এসেছিলেন কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। রাতের পোশাকে, পায়ে হালকা চটি। হাতে রজনীগন্ধার গুচ্ছ। শবদেহের পাশে ফুল রেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে গেলেন। কোনো কথা বললেন না। অন্যরা থাকলেন অনেকক্ষণ।

আর সেদিন কবিপত্নী লাবণ্য দাশ ঝুল বারান্দার কাছে ডেকে নিয়ে গেলেন ভূমেন্দ্র গুহকে। তারপর বললেন, ‘অচিন্ত্যবাবু (অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত) এসেছেন, বুদ্ধদেব (বুদ্ধদেব বসু) এসেছেন, সজনীকান্ত এসেছেন, তাহলে তোমাদের দাদা নিশ্চয়ই বড়মাপের সাহিত্যিক ছিলেন; বাংলা সাহিত্যের জন্য তিনি অনেক কিছু রেখে গেলেন হয়তো, আমার জন্য কী রেখে গেলেন, বল তো!’ 

সূত্র: ভূমেন্দ্র গুহ, আলেখ্য জীবনানন্দ, পৃষ্ঠা ২৭-২৮

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার