হোম > আড্ডা

ফাদার

সম্পাদকীয়

একটি হাসপাতালে চেকআপের জন্য গিয়েছেন সৈয়দ শামসুল হক। একজন স্বনামধন্য কৃতী চিকিৎসক হাসপাতালটি গড়ে তুলেছেন। সাধারণ মানুষের উপকারে যেন হাসপাতালটি লাগে, সেটাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। এ ঘটনার কিছুদিন আগে সেই মানবিক চিকিৎসক মারা গেছেন।

সৈয়দ হককে হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করার জন্য সেই হাসপাতালেরই আরেকজন বড় চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর কথামতো পরদিন সকাল ৮টায় সৈয়দ হক হাজির হয়েছেন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের দরজায়। ঢুকতে যাচ্ছেন, এ সময় দরজায় দাঁড়ানো পিয়ন হাত তুলে দরজা রোধ করে দাঁড়াল। সৈয়দ হক পিয়নের দিকে তাকালেন। পিয়ন বললেন, ‘ভিতরে যেতে পারবেন না।’

সৈয়দ হক হাতে থাকা কাগজটা দেখালেন। জানালেন, সকাল ৮টায় বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। পিয়ন নির্বিকার মুখে বললেন, ‘ডাক্তার সাহেবের হুকুম, তাঁর ফাদার এলেও বাইরে দাঁড়াতে হবে।’

হ্যাঁ, পিয়ন সাহেব ‘ফাদার’ শব্দটাই উচ্চারণ করেছিলেন। আব্বা বা বাবা নয়।

তৎক্ষণাৎ সৈয়দ হকের মনে পড়ে গেল নীরদ সি চৌধুরীর একটি উক্তির কথা। তিনি লিখেছিলেন, অক্ষরজ্ঞানহীন বা স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তিরাও ‘সময়’ শব্দের বদলে ‘টাইম’ ইংরেজি শব্দটি ব্যবহার করে। এর পেছনের মানসিকতা ভেবে দেখার মতো।

শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা হয়। তাঁর নির্বিকার চেহারায় কোনো মমত্ব নেই। তিনি ইসিজি করে ফিরতে বলেন। ইসিজি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে ফিরে আসার পর একটা প্রশ্ন সৈয়দ হকের মনের মধ্যে কিলবিল করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সৈয়দ হক প্রশ্নটা করেই বসেন চিকিৎসককে। ‘আচ্ছা, আপনি কি আপনার পিয়নকে সত্যিই বলেছেন, আপনার বাবা এলেও তাঁকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে?’

কী উত্তর দিলেন ভদ্রলোক? বহুকাল ইউরোপে পড়াশোনা করে আসা এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বললেন, ‘হ্যাঁ, আমার হুকুম আছে আমার ফাদার এলেও তাঁকে বাইরে অপেক্ষা করতে হবে।’

সৈয়দ হক লিখেছেন, ‘এ দেশে শিক্ষা মানুষকে অমানুষ করেছে, বাপকে ফাদারে পরিণত করেছে।’ 

সূত্র: সৈয়দ শামসুল হক, হৃৎকলমের টানে, পৃষ্ঠা ১৫১-১৫২ 

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার

চটপটিটা মজার