‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স (১৮৪৪)’ উপন্যাসটি আলেক্সান্ডার দুমা লিখেছিলেন পত্রিকার জন্য। রফা হয়েছিল এভাবে: লেখার প্রতিটি লাইনের জন্য তিনি টাকা পাবেন। সংবাদপত্রের লাইনেজের মতো। লাইন গুনে টাকা। একটু বেশি আয় করার জন্য একটা উপায় বের করলেন দুমা। তিনি মাস্কেটিয়ার আতোসের এক মিতবাক পরিচালকের জন্ম দিলেন লেখায়। যেকোনো প্রশ্নে উত্তর দেয় সে এভাবে:
‘হ্যাঁ’।
‘না’।
অর্থাৎ, এক শব্দে এক বাক্য। এক বাক্যে এক লাইন! বাড়তি টাকা! এরপর যখন ‘টোয়েন্টি ইয়ার্স আফটার’ (১৮৪৫) লিখতে বসলেন, তখন চুক্তিটা পরিবর্তিত হয়ে গেল। তখন প্রতিটি শব্দের জন্য তিনি টাকা পেতেন। এ সময় আতোসের চাকর বা পরিচারকটির মুখ খুলে গেল। সে কথার তুবড়ি ছোটাল। যত শব্দ, তত টাকা! দুমা সে সুযোগ ছাড়েন কী করে?
আরেকটি ঘটনা না বলে পারছি না। প্যারিসের থিয়েটার ভারিত্তে প্রদর্শিত হচ্ছিল দুমার নাটক। বিশতম প্রদর্শনী থেকে দর্শকসংখ্যা অনেক বেড়ে গেল, থিয়েটারের আয় বেড়ে গেল অনেক। তখন কর্তৃপক্ষ ঠিক করল, ৬০ হাজার ফ্রাঙ্কের বেশি আয় হলে সম্মানীর বাইরেও প্রতিটি শো থেকে এক হাজার ফ্রাঙ্ক বাড়তি দেওয়া হবে দুমাকে। সেভাবেই চলছিল সব।
পঁচিশতম প্রদর্শনীর প্রথম অঙ্ক শেষ হতেই দুমা এলেন তাঁর প্রাপ্য নিতে। কিন্তু বেঁকে বসলেন থিয়েটারের পরিচালক। তাঁর মুখে এসে গেল একটা সংখ্যা। তিনি বলে বসলেন, ‘আজ ৬০ হাজার ফ্র্যাঙ্ক হয়নি। আজ আয় হয়েছে ৫৯৯৯৭ ফ্র্যাঙ্ক!’ দুমা কিছু বললেন না। বেরিয়ে গেলেন।
তারপর ফিরলেন নাটকের একটা টিকিট হাতে। পরিচালককে বললেন, ‘আমি ৫ ফ্র্যাঙ্ক দিয়ে এই টিকিটটি কিনলাম। এখন নিশ্চয়ই ৬০০০২ ফ্রাঙ্ক হয়েছে। এবার নিশ্চয়ই চুক্তির শর্ত পূরণ হয়েছে!’
তথ্যসূত্র: লাইভলিব.রু