হোম > আড্ডা

‘নাই’ শব্দে টান

এমন অনেক লোকগীতি আছে, যার রচয়িতা কবি জসীমউদদীন। গানগুলোর প্রথম পঙ্‌ক্তি উচ্চারণ করলেই যে কেউ বলে উঠবে, ‘আরে! এ গান পল্লিকবির লেখা! জানা তো ছিল না!’

আমরা যদি ‘নিশীথে যাইও ফুলবনে ও ভোমরা’ গানটির কথা মনে করি, তাহলে নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারি, এটা শচীন দেববর্মনের গান। হ্যাঁ, শচীনকত্তাই//// গানটি গেয়েছেন, তাঁর কণ্ঠেই গানটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে, কিন্তু এই গানের লেখক হলেন জসীমউদ্দীন। তবে সত্যের খাতিরে বলে নেওয়া ভালো, শেখ ভানু নামে একজন লেখকের আধ্যাত্মবাদী একটি গান থেকেই শব্দগুলো পাল্টে জসীমউদদীন তৈরি করেছিলেন এই প্রেমের গান।

কাজল ভ্রমরা রে, ও আমার সোনার ময়না পাখি, আমার হার কালা করলাম রে, আমায় এত রাতে কেন ডাক দিলি, আমায় ভাসাইলি রে, নদীর কূল নাই, কিনার নাই রে—গানগুলো কি পরিচিত ঠেকছে? সবগুলোই জসীমউদদীনের লেখা।

আব্বাসউদ্দীনের কন্যা শিল্পী ফেরদৌসী রহমানের সৌভাগ্য, তিনি জসীমউদদীনের সান্নিধ্য পেয়েছেন। খুব বেশি সুরেলা ছিল না কবির কণ্ঠ, কিন্তু গানগুলো গাইতেন তিনি প্রাণ দিয়ে, দরদ দিয়ে, মমতা দিয়ে। ফেরদৌসী যখন গাইতেন, তখন ঠিক সুরটা যেন হয়, সে জন্য শুধরে দিতেন।

একবার জসীমউদদীন এসে বসলেন ফেরদৌসীর সামনে। বললেন, ‘তুমি গানটা গাইবে, তার আগে আমি দেখিয়ে দিই।’ তিনি গাইতে লাগলেন ‘নদীর কূল নাই, কিনার নাই রে।’ ‘নাই’ শব্দটি এমন লম্বা টানে গাইলেন যে আবেগে তাঁর চোখে পানি চলে এল।

ফেরদৌসী ভাবলেন, হুবহু এভাবেই গাইতে হবে গানটি। তিনিও ‘নাই’ শব্দটি গাইলেন লম্বা টানে। এবং সেই টানের মধ্যেই কেঁদে ফেললেন।

জসীমউদদীন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মাগো, তুমি কাঁদছ কেন?’

ফেরদৌসী রহমান বললেন, ‘চাচা, আপনিও তো গানের এই জায়গায় এসে কেঁদেছিলেন!’ 

সূত্র: জসীমউদদীন শতবর্ষ স্মারকগ্রন্থ, বাংলা একাডেমি, পৃষ্ঠা ৭০-৭১

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার