হোম > আড্ডা

সৃজনশীলতা আর নোটবই

সম্পাদকীয়

পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘অমুকের চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য নিজের ভাষায় লেখো।’ এ প্রশ্নটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। প্রশ্ন তো ছিল ‘নিজের ভাষায় লেখো’, কিন্তু শিক্ষার্থীরা যদি নিজের ভাষায় লিখত, তাহলে ভালো নম্বর পেত না।

ভালো নোট মুখস্থ করেই তখন ‘নিজের ভাষা’য় উত্তর দেওয়া হতো। নিজের ভাষায় লেখার ‘অপচেষ্টা’ কেউ করত না।

শিক্ষকেরা জানতেন, এই উত্তরদাতা মোটেই সে নিজে নয়, মহান নোটবইয়ের মাধ্যমেই উত্তর নাজেল হয়েছে। তারপরও শিক্ষকেরা ভালো নম্বর দিতেন। ফলে ভাবনার দৈন্য এভাবেই দিন দিন প্রকটিত হচ্ছিল। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করত না, নোট মুখস্থ করত, পড়াশোনা করত নোট-লেখকেরা।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের শিক্ষকতা জীবন তিন দশক ছাড়িয়ে। তিনি যখন ক্লাসে উপস্থিত হতেন, তখন পাঠ্যবই পড়ানোর চেষ্টা করতেন না। শিক্ষার্থীরা বলতে পারবে না, তিনি শুধু পরীক্ষায় পাসের বই পড়াচ্ছেন। তিনি চেষ্টা করেছেন শিক্ষার্থীর মনের মধ্যে সাহিত্যের দ্বীপশিখা জ্বালিয়ে দিতে। তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি চেষ্টা করেছেন শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা যেন রক্তিম হয়, হৃদয় জেগে ওঠে, সাহিত্য পড়তে তারা উদ্বুদ্ধ হয়। এটা তিনি করতেন জেনে-বুঝেই। ক্লাসে যা-ই পড়ানো হোক না কেন, শিক্ষার্থীরা তা পরীক্ষার খাতায় লিখবে না। তারা খাতায় লিখবে নোটবই মুখস্থ করে। বেহুদা খেটে লাভ কী?

শিক্ষার্থীরা ক্লাসের এই আড্ডা উপভোগ করত। কিন্তু কোনো কোনো অভিভাবক এসে তাঁকে বলতেন, ‘আপনার ক্লাস থেকে তো ছাত্রদের কোনো লাভ হয় না।’

‘লাভ’ মানে নম্বর। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাঁদের সরাসরি বলতেন, লাভের জন্য নোটবই কিনতে।

এই শিক্ষক কোনোদিন রোল কলও করেননি। কিছুই ‘শেখাতেন না’, তারপরও তাঁর ক্লাসে নিজের ক্লাসের তো বটেই, অন্য ক্লাস থেকেও শিক্ষার্থীরা এসে ভিড় জমাত, এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার! 

সূত্র: আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, বক্তৃতা সংগ্রহ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৭

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার