হোম > আড্ডা

জুতা চুরি

সম্পাদকীয়

১৯৮০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে আবু জাফর শামসুদ্দীন ছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের মস্কোতে। সেদিন তিনি রুশ গল্পকার আন্তন চেখভের বাসভবন দেখতে গিয়েছিলেন। যেকোনো খ্যাতনামা লেখক, কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকরের বাড়ি সোভিয়েত ইউনিয়নে হয়ে উঠেছিল মিউজিয়াম। আন্তন চেখভের বাড়িটিও তখন পরিণত হয়েছে মিউজিয়ামে। সেখানে চেখভ পরিবারের আসবাব, চেখভের হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি, তাঁর লেখা বিভিন্ন বই রয়েছে।

প্রথা অনুযায়ী, মিউজিয়ামে ঢুকতে হয় জুতা খুলে, খালি পায়ে। জুতা খুলতে গিয়ে একটু ইতস্তত করলেন আবু জাফর শামসুদ্দীন। জুতা চুরি হয়ে যাবে না তো!

একসময় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ঈদের নামাজ আদায় করতে গিয়েছিলেন তিনি। নতুন কেনা পাম্প শু জোড়া রেখেছিলেন নামাজের জন্য পাতা ফরাসের এক পাশে। ঈদের প্রায় ৪৫ মিনিটের সুদীর্ঘ মোনাজাতের পর যখন নামাজ শেষ হলো, তখন বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুত হলেন সবাই। আবু জাফর শামসুদ্দীন বাড়ি ফেরার জন্য যখন জুতার দিকে হাত বাড়ালেন, দেখলেন জুতাজোড়া গায়েব। পুলিশ লাইনসের মসজিদে পুলিশ ও মুসল্লি ছাড়া বাইরের কেউ ছিল না, ফলে কোনো চোর এসে চুরি করে নিয়ে যাবে, সে রকম হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।

কী করবেন আবু জাফর শামসুদ্দীন? পরনে আচকান, পায়জামা, টুপি, মোজা। এই পোশাকের সঙ্গে যদি পদযুগল থাকে পাদুকাহীন, তাহলে তাঁকে দেখে হাসাহাসির রোল পড়ে যেত রাস্তায়। তাই তিনি ছেলেকে পাঠালেন বাড়িতে একজোড়া স্যান্ডেল আনার জন্য। সেই স্যান্ডেল এলে তিনি বাড়ি ফিরলেন।

জুতা খুলে রাখার বিড়ম্বনা জানতেন তিনি। তাই ইতস্তত ভাবটি সেখান থেকেই এসেছিল। কিন্তু আন্তন চেখভের মিউজিয়াম তো কোনো ইবাদতের জায়গা নয়। তা ছিল সে সময় কমিউনিস্ট শাসনের একটি দেশ। সে দেশটি ধর্মের ব্যাপারে ছিল নিরপেক্ষ। এটা বুঝতে একেবারেই অসুবিধা হয়নি, মিউজিয়াম কি মন্দির-মসজিদ—কোথাও থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে জুতা চুরি হয় না।

সূত্র: আবু জাফর শামসুদ্দীন, আরেক ভুবন সোভিয়েত ইউনিয়ন, পৃষ্ঠা ৭৮-৭৯

কোচির ইহুদি পরিবারের ঐতিহ্য যেভাবে বাঁচিয়ে রাখছেন এক মুসলিম

গাবতলী সেতু বধ্যভূমি

সাহিত্যচর্চা এবং মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট

রমনা কালীবাড়ি বধ্যভূমি

আমাদের অর্জন অনেক

এবার অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’—এর অর্থ কী

রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

জল্লাদখানা বধ্যভূমি

সিদলের স্বাদ

লেখকের সামাজিক অঙ্গীকার