ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আরও এক আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি আমিনুল ইসলাম রাজু। মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদকে সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে থাকতে সহায়তার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জুনাইদ আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
আমিনুল ইসলাম রাজুকে গতকাল মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-১১ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ তাঁকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ।
আবেদনে বলা হয়, আসামি রাজু ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে ফিলিপ নামের একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রধান আসামি ফয়সালকে সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপনে থাকতে সহায়তা করেন রাজু।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে একটি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে মাথায় গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তিন দিন পর ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
ফয়সাল করিম মাসুদকে আসামি করে ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। হাদি মারা যাওয়ার পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপ নেয়।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির ও মা মোসা. হাসি বেগম, ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ-কারের ব্যবসায়ী মো. নুরুজ্জামান নোমানী উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ভারতে পালাতে সহায়তাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।
তাঁদের মধ্যে হুমায়ুন কবির ও হাসি বেগম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। নুরুজ্জামান নোমানীকে একবার এবং বাকিদের দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।