কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গেছে বাড়ির পেছনের পাটখেতে। পুলিশ আজ শুক্রবার সকালে লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত রোজা মণি (৬) সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের চরমারিয়া গ্রামের মোহাম্মদ সুমনের মেয়ে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোজা ৬ জুলাই বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তায় খেলা করছিল। পরে সে নিখোঁজ হলে পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি।
রোজার ফুফাতো ভাই নাইম মিয়া জানায়, আজ সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তি জমিতে ঘাস কাটতে গিয়ে দুর্গন্ধ পান। পরে পাশের পাটখেতে খোঁজাখুঁজি করে শিশুর অর্ধগলিত লাশটি দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।
নিহত শিশুর দাদি গুলনাহার বেগম জানান, রোজার মা ও বাবা গাউছিয়াতে থাকেন। এই সুবাদে গুলনাহারের কাছে থাকত রোজা। তিনি ৬ জুলাই বিকেলে মসলা ভাঙাতে দোকানে যান। ফিরে এসে নাতনিকে আর খুঁজে পাননি।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকেরা শিশুদের বাড়ির বাইরে খেলতে দেওয়া নিয়ে ভয়ে রয়েছেন। তাঁরা দ্রুত তদন্ত করে ঘটনার আসল কারণ বের করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রতিবেশী সাকিব হাসান জানান, খবর পেয়ে তাঁরা পাটখেতে গিয়ে দেখেন, রোজার শরীরের কাপড়গুলো খানিকটা দূরে পড়ে রয়েছে। আরেক প্রতিবেশী হিরা মিয়া জানান, তাঁর মেয়ের সঙ্গেই খেলাধুলা করত রোজা। তবে যেখান থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে তার যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, কিংবা এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কি না—তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ বিষয়ে রোজার বাবা মোহাম্মদ সুমন বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশ যাকে আটক করেছে, তার নাম রাসেল মিয়া। রাসেল গতকালও বলেছে, সে নাকি স্বপ্নে দেখেছে আমার মেয়েকে কে বা কারা খুন করে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখেছে। এরপরই তার প্রতি সন্দেহ বাড়ে। রাসেল আমার বন্ধু ছিল। আমার মেয়েটা তাকে খুব সম্মান করত। সে যে এমন করবে, আমি কল্পনাও করতে পারছি না।’