Ajker Patrika

অ্যাশেজ শেষই হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসারের

ক্রীড়া ডেস্ক    
অ্যাশেজ থেকে ছিটকেই গেলেন জশ হ্যাজলউড। ছবি: ক্রিকইনফো
অ্যাশেজ থেকে ছিটকেই গেলেন জশ হ্যাজলউড। ছবি: ক্রিকইনফো

চোট যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না জশ হ্যাজলউডের। অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্টে না খেলতে পারলেও পরের অংশে ফেরার সম্ভাবনা ছিল। শেষ পর্যন্ত আর অ্যাশেজে খেলাই হলো না অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা পেসারের।

মাংসপেশির চোটে পড়ে অ্যাশেজ থেকে পুরোপুরি ছিটকে গেলেন হ্যাজলউড। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড সেটা নিশ্চিত করেছেন। হ্যাজলউডকে নিয়ে আজ ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত তাকে (হ্যাজলউড) আর অ্যাশেজে পাওয়া যাবে না। খুবই বাজে অবস্থা তার জন্য। এরকম যে জোড়া ধাক্কা খাবে, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। ভেবেছিলাম সে অ্যাশেজে দারুণ এক অবদান রাখবে।’

প্যাট কামিন্সও অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্ট খেলতে পারেননি। এমনকি ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্টের দলে তাঁর নাম না থাকলেও একাদশে ফেরার একটা সম্ভাবনা ছিল বলে জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। কামিন্স শেষ পর্যন্ত খেলতেই পারেননি। তবে অ্যাডিলেডে ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে কামিন্স অধিনায়ক হয়েই ফিরবেন বলে আশা ম্যাকডোনাল্ডের। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ বলেন, ‘প্যাটের জন্য ম্যাচ খেলার কোনো সুযোগ ছিল না। আমরা অনেক কাজ করেছি তার ব্যাপারে। সে সেরে উঠতে অনেক চেষ্টা করছে। ফেরার জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে।’

হ্যাজলউড গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট শেফিল্ড শিল্ডে খেলতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েছিলেন। সেই চোটই কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁর জন্য। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রস্তুত হচ্ছেন হ্যাজলউড। আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত-শ্রীলঙ্কায় হবে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে চোটে পড়ে এ বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে পারেননি হ্যাজলউড। আইসিসির এই ইভেন্টে খেলা হয়নি কামিন্স-মিচেল মার্শেরও।

পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। দুই টেস্টেই অজিরা ৮ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। পার্থে অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট শেষ হয়েছিল দুই দিনে। ব্রিসবেনের গ্যাবায় দ্বিতীয় টেস্ট চার দিনে শেষ হয়েছিল। অ্যাডিলেড টেস্টের পর হবে বক্সিং ডে টেস্ট। ২৬ ডিসেম্বর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) মাঠে গড়াবে চতুর্থ টেস্ট। পঞ্চম টেস্ট নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি সিডনিতে শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাক্ষাৎকার

সবাই কথা বলার অভ্যাসটা গড়ে তুলছে

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০২৫ সালে সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ ছক্কা সবই তানজিদ হাসান তামিমের। ছবি: এএফপি

আয়ারল্যান্ড সিরিজের পরই জাতীয় দলের বেশিরভাগ সতীর্থ গেছেন ছুটিতে। তানজিদ হাসান তামিম সেখানে ব্যতিক্রম। ছুটিতে অনুশীলন ক্যাম্প করছেন কোচিং স্টাফদের সঙ্গে। অথচ টি-টোয়েন্টি এ বছর এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ ছক্কা, এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ক্যাচের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন তানজিদ। কাল আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুধু বছরটা ফিরে দেখেননি, তরুণ বাঁহাতি ওপেনার চোখ রেখেছেন আসন্ন বিপিএল ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

রানা আব্বাস, ঢাকা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩

প্রশ্ন: এ বছরের টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক আপনি। তারপরও এই ছুটিতে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন?

তানজিদ তামিম: দেখুন স্কিলের ব্যাপারে তো আমাদের নিয়মিত উন্নতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কারণ, ম্যাচের মধ্যে একেকরকম পরিস্থিতি আসে। সব রকম পরিস্থিতিই সামলাতে হয়। তো আমার কাছে মনে হয় এখানে যেরকম ক্যাম্পটা হচ্ছে এখন, এখানে আমরা লো-রিস্কের গ্যাপটা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি এবং সিঙ্গেলস-ডাবলসের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। যেটা অনেক সময় হয়তোবা থাকে, আবার অনেক সময় হাইরিস্ক নিয়ে খেলি আমরা। সেখানে আমরা লো-রিস্ক নিয়ে রানের চাকা সচল রাখতে পারি, এটা নিয়েই মূলত কাজ হচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় এটা ভালো কাজে দেবে।

প্রশ্ন: মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন, মোহাম্মদ আশরাফুল দুজন ব্যাটিং বিশেষজ্ঞ আছেন। কার কাছ থেকে কী শিখছেন?

তানজিদ: সালাহ উদ্দীন স্যারের সঙ্গে অনেক দিন ধরে কাজ করা হচ্ছে। সেটা সবাই খুব ভালোভাবেই জানেন যে সালাহ উদ্দীন স্যার কেমন কাজ করেন টেকনিক্যাল বিষয়ের দিক থেকে। আশরাফুল ভাইয়ের কাছ থেকে যে জিনিসটা ভালো হচ্ছে আর কী, তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের সবকিছু আমাদের সঙ্গে শেয়ার করছেন। তিনি কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে কী রকম ব্যাটিং করতেন অথবা বড় দলগুলোর সঙ্গে বড় রান করেছেন, তাঁর মানসিকতা কেমন ছিল কিংবা কী প্রক্রিয়ায় খেলেছেন। তো আমি সব সময় তাঁর কাছে এসব প্রশ্নই করি এবং সব সময় জানার চেষ্টা করি যে এসব বড় দলের সঙ্গে কীভাবে রান করা যায়। তো আমার কাছে মনে হয় এটা খুব ভালোভাবে কাজে লাগছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পাওয়ার হিটিংয়ের ব্যাপারে প্রশ্ন থাকে। সেখানে আপনি এক বছরে ৪১ ছক্কা মেরেছেন। শুধু বেসিক ক্রিকেটেই ছক্কা নাকি পাওয়ার হিটিং নিয়ে বিশেষ কাজ করেছেন?

তানজিদ: কখনো এরকম চিন্তা করি না যে ছক্কা মারব বা ছক্কার অনুশীলন করব। কিংবা ছক্কা মারতে অতিরিক্ত অনুশীলন করতে হবে। কখনো এভাবে চিন্তা করি না। আমি শুধুই স্বাভাবিক অনুশীলন করি কিংবা সাধারণ যে ব্যাটিং অনুশীলন হয় স্কিল নিয়ে, সেই বেসিকটাই ঠিক রাখার চেষ্টা করি এবং মাঠে যখন আমার জোনে যে বল পাই, আমার শক্তির জায়গা যেটা থাকে, যেটা অনুশীলন করি, সেটা যেন মাঠে প্রয়োগ করতে পারি। একই প্রক্রিয়াই ধরে রাখার চেষ্টা করি। কখনো চিন্তা করি না আমার ছক্কা মারতে হবে কিংবা ছয়ের অনুশীলন আলাদাভাবে করব। আমি সাধারণত শক্তি দিয়ে খুব কম মারতে পারি। শুধু টাইমিংয়ের ওপরে খেলি। কখনো চিন্তা করি না যে বল জোরে মারব কিংবা অনেক শক্তি দিয়ে খেলার চেষ্টা করি না।

প্রশ্ন: আপনার একটা ক্যাচের রেকর্ড হয়ে গেল। স্নায়ুচাপে ক্যাচ ড্রপ হয় বাংলাদেশের ফিল্ডারদের। কিন্তু ক্যাচ ধরার হার এত ভালো হওয়ার কারণ কী?

তানজিদ: এমন কিছু না। আসলে ক্যাচ মিস যেটা হয়, সেটা খেলারই একটা অংশ। এটা হতেই পারে। সেখান থেকে আমরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেই দিকেই ফোকাস থাকতে হয় সব সময়। আমাদের শেষ কয়েকটা সিরিজ দেখবেন। আমরা ফিল্ডিংয়ে অনেক ভালো করছি। আমাদের যিনি ফিল্ডিং কোচ আছেন, তিনি সবার সঙ্গে আলাদাভাবে অনেক কাজ করেন এবং টিম বন্ডিং... আসলে টিম বন্ডিং না হলে ফিল্ডিংয়ে অনেক সমস্যা হয়। ছোট ব্যাপারগুলো আমাদের অনেক উপকার করছে। আর ৫ ক্যাচের যেটা বললেন, আমার কাছে সত্যিই অনেক মজার লেগেছে। কারণ, এক ম্যাচে পাঁচটা ক্যাচ আমি ধরব, কখনো কল্পনা করিনি। এদিক থেকে আমি বলব যে ভাগ্যবান। আলহামদুলিল্লাহ। চেষ্টা করব প্রতিদিন যেন ফিল্ডিংয়ে আরও একটু উন্নতি করা যাচ্ছে।

প্রশ্ন: ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপটা ছিল ভুলে যাওয়ার মতো। এবার কী গল্প লেখার স্বপ্ন নিয়ে যেতে চান?

তানজিদ: এভাবে চিন্তা করি না। সবকিছুর একটা প্রক্রিয়া আছে। সেই একই প্রক্রিয়ায় এগোতে চাই। অবশ্যই লক্ষ্য তো ভালো কিছু করারই থাকবে। বিশ্বকাপে যাতে ভালো একটা জায়গায় যেতে পারি এবং বাংলাদেশকে ভালো জায়গায় দেখতে চান সবাই। প্রথমে আমরা গ্রুপ পর্ব থেকে কীভাবে সুপার এইটে যেতে পারি, ধাপে ধাপে যদি এগোতে পারি, তাহলে আমাদের দলের জন্য অনেক ভালো। আর ভারতের কথা যেটা বললেন, ২০২৩ সালে অনেক ম্যাচে ভালো শুরু পেয়েছি। যে শুরুগুলো বড় করতে পারিনি। আর আইসিসি ইভেন্টে আমি সত্যি কথা বলতে অতটা সফল না। আইসিসি ইভেন্ট বলেন, এশিয়া কাপ বলেন, আমার সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি। যেটা এখনো আমার ভাবতে খারাপ লাগে। তো চেষ্টা করেছি ব্যাটিংয়ে এমন ভালো শুরু পেলে কীভাবে বড় করা যায় কিংবা ইনিংসটা আমি লম্বা করতে পারি। যেটা আমার জন্যও উপকারী হবে এবং দলকেও অনেক সহায়তা করবে। চেষ্টা থাকবে যেন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করতে পারি এবং আইসিসি ইভেন্টে নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে বাংলাদেশ দলে অবদান রাখতে পারি, এই চেষ্টা থাকবে।

প্রশ্ন: একটা পডকাস্টে সাকিব আল বলেছেন, বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে জুনিয়ররা কম কথা বলেন। এখানে কি এখন কোনো পরিবর্তন আসছে?

তানজিদ: আসলে ভাই (সাকিব) একদম ঠিক বলেছেন। এখন আমাদের প্রধান কোচ, সালাহ উদ্দীন স্যার ও টিম ম্যানেজমেন্টে যাঁরা কোচ আছেন, চেষ্টা করছেন সংস্কৃতিটা যেন বদলাতে পারি। যখন দলীয় বৈঠক হয়, সব কোচেরা আলোচনা করেন, যাতে সবাই (ক্রিকেটাররা) কিছু না কিছু মতামত দেয়। যেকোনো ম্যাচের আগে কিংবা দলীয় বৈঠকে এখানে আসলে সবাইকে কথা বলতে হয়। ব্যাটার, বোলার বলেন সবাইকেই কিছু না কিছু। যেকোনো কিছুই হোক, এক দুই লাইন হলেও টিম মিটিংয়ে আপনাকে বলতে হবে। আসলে আমার কাছে মনে হয় যে সবার ভেতর থেকে একটা দুইটা বিষয় যে আসে, অনেক সময় দলের কাজে লাগে। অথবা আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। অনেক ছোট কথা হলেও সেখানে অনেক বড় কিছু থাকতে পারে। তো আমার কাছে মনে হয়, এটা ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। সবাই আসলে কথা বলার অভ্যাসটা গড়ে তুলছে। আমার কাছে মনে হয় সংস্কৃতিটা পরিবর্তন হচ্ছে।

প্রশ্ন: নিকট ভবিষ্যতে টেস্ট খেলার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

তানজিদ: যদি এখনো সাদা বলে খেলা বেশি, সাদা বলেই মূলত মনোযোগ থাকছে। আমি যখনই সুযোগ পাই, জাতীয় লিগ খেলি। লাল বলের ক্রিকেট খেলতে আমার ভালো লাগে। যদি কখনো সুযোগ আসে, অবশ্যই লাল বলের ক্রিকেটও খেলতে চাই। তার জন্য আমাকে বেশি পরিশ্রম এবং আরও বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করে যাব। যদি আল্লাহ চান এবং আমি লাল বলে রান করতে থাকি, তাহলে ইনশা আল্লাহ অবশ্যই খেলব টেস্ট।

প্রশ্ন: বিপিএলে সরাসরি চুক্তিতে না গিয়ে নিলামে উঠলে কি বেশি দাম পেতেন বলে মনে হয়?

তানজিদ: যেটা পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। নাবিল গ্রুপকে ধন্যবাদ দিতে হয়। কারণ, তারা আমাকে সরাসরি সাইনিংয়ে রেখেছে (রাজশাহী)। অনেক ভালো একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল হয়েছে। যেখানে শান্ত ভাই, মুশি ভাইয়ের মতো ক্রিকেটার আছেন। অনেক অভিজ্ঞতাপূর্ণ এবং কিংবদন্তি আমাদের দেশের জন্য। তাদের বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ারও অভিজ্ঞতা আছে। তো আশা করি ভালো কিছুই হবে। নিজ বিভাগের হয়ে এবার খেলছি। কখনো খেলা হয়নি রাজশাহীর হয়ে। তো এটা একটা গর্বের বিষয়। তো দেখা যাক ইনশা আল্লাহ ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাকিবের কথার সঙ্গে একমত তানজিদ তামিম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ড্রেসিংরুম নিয়ে সাকিব আল হাসানের কথার সঙ্গে একমত তানজিদ হাসান তামিম। ছবি: ক্রিকইনফো
ড্রেসিংরুম নিয়ে সাকিব আল হাসানের কথার সঙ্গে একমত তানজিদ হাসান তামিম। ছবি: ক্রিকইনফো

‘বিয়ার্ড বিফোর উইকেট’ পডকাস্টে সাকিব আল হাসানের দীর্ঘ ৬৬ মিনিটের আলাপচারিতায় অনেক কিছু নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ছিল সেই আলোচনায়। সেই পডকাস্টে সাকিব দেশের ক্রিকেটের ড্রেসিংরুম নিয়ে যা বলেছেন, সেটা সঠিক মনে করছেন তানজিদ হাসান তামিম।

জুনিয়র ক্রিকেটাররা একেবারে কথা বলেন না, যা বলার সিনিয়র ক্রিকেটাররাই বলবেন—বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম নিয়ে পডকাস্টে সাকিবের কথাটা ছিল এরকমই। কিন্তু দলীয় সভায় সবার যখন সমান অংশগ্রহণ থাকবে, সেটা দেশের ক্রিকেটের জন্যই মঙ্গল। ভুল-ভ্রান্তি শুধরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তাতে বাড়বে। ড্রেসিংরুমে সিনিয়র, জুনিয়র সব ক্রিকেটাররাই যেন কথাবার্তা বলতে পারেন, সেরকম সংস্কৃতি এখন বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট তৈরি করছে বলে আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। ২৫ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘আসলে ভাই (সাকিব) একদম ঠিক বলেছেন। এখন আমাদের প্রধান কোচ, সালাহ উদ্দীন স্যার ও টিম ম্যানেজমেন্টে যাঁরা কোচ আছেন, চেষ্টা করছেন সংস্কৃতিটা যেন বদলাতে পারি। যখন দলীয় বৈঠক হয়, সব কোচরা আলোচনা করেন, যাতে সবাই (ক্রিকেটাররা) কিছু না কিছু মতামত দেয়। যেকোনো ম্যাচের আগে কিংবা দলীয় বৈঠকে এখানে আসলে সবাইকে কথা বলতে হয়। ব্যাটার, বোলার বলেন সবাইকেই কিছু না কিছু।’

সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তানজিদ তামিমের। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে এই তিন ক্রিকেটারই ছিলেন। সিনিয়রদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে থাকার সময় যেমন পরিবেশ ছিল, সেই তুলনায় অনেক কিছু পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তানজিদ তামিম। আজকের পত্রিকাকে বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘যেকোনো কিছুই হোক, এক দুই লাইন হলেও টিম মিটিংয়ে আপনাকে বলতে হবে। আসলে আমার কাছে মনে হয় যে সবার ভেতর থেকে একটা দুইটা বিষয় যে আসে, অনেক সময় দলের কাজে লাগে। অথবা আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। অনেক ছোট কথা হলেও সেখানে অনেক বড় কিছু থাকতে পারে। তো আমার কাছে মনে হয়, এটা ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। সবাই আসলে কথা বলার অভ্যাসটা গড়ে তুলেছে। আমার কাছে মনে হয় সংস্কৃতিটা পরিবর্তন হচ্ছে।’

২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সংস্করণে এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে পথচলা শুরু। আড়াই বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪৫ টি-টোয়েন্টি ও ২৮ ওয়ানডে খেলেছেন। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণ টেস্টে এখনো অভিষেক না হলেও আশা হারাচ্ছেন না তানজিদ তামিম। আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘যদি এখনো সাদা বলে খেলা বেশি, সাদা বলেই মূলত মনোযোগ থাকছে। আমি যখনই সুযোগ পাই, জাতীয় লিগ খেলি। লাল বলের ক্রিকেট খেলতে আমার ভালো লাগে। যদি কখনো সুযোগ আসে, অবশ্যই লাল বলের ক্রিকেটও খেলতে চাই। তার জন্য আমাকে বেশি পরিশ্রম এবং আরও বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করে যাব। যদি আল্লাহ চান এবং আমি লাল বলে রান করতে থাকি, তাহলে ইনশা আল্লাহ অবশ্যই খেলব টেস্ট।’

বাংলাদেশের জার্সিতে ৭৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে মজার এক রেকর্ড তানজিদ তামিম গড়েছেন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ ক্যাচ ধরেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ পাঁচ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডে যৌথভাবে শীর্ষে তিনি। টেস্টে এখনো অভিষেক না হলেও ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেটে নিয়মিত খেলছেন তানজিদ তামিম। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৫ ম্যাচে ৪৫ ইনিংসে করেছেন ১৭৯২ রান। ৫ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটি করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানি ক্রিকেটারের রেকর্ডে ভাগ বসালেন ভারতের অমিত

ক্রীড়া ডেস্ক    
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েছেন বিলাল আসিফ ও অমিত পাসি। ছবি: ক্রিকইনফো
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার রেকর্ড গড়েছেন বিলাল আসিফ ও অমিত পাসি। ছবি: ক্রিকইনফো

চার-ছক্কার ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টিতে এখন হরহামেশাই চলে রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে খুব কম রেকর্ডই দীর্ঘস্থায়ী হয়। এবার টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার খেলতে নেমেই রেকর্ড বইয়ে নাম লেখালেন ভারতের অমিত পাসি।

সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে আজ হায়দরাবাদের জিমখানা গ্রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছে সার্ভিসেস-বরোদা। টি-টোয়েন্টিতে অমিতের অভিষেক হয়েছে বরোদার জার্সিতে। ৫৫ বলে ১০ চার ও ৯ ছক্কায় করেন ১১৪ রান। তাতে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার রেকর্ডে এখন যৌথভাবে শীর্ষে অমিত ও পাকিস্তানের বিলাল আসিফ। আসিফও টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমে ১১৪ রান করেছিলেন। পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার রেকর্ড ইনিংসটা খেলেছিলেন শিয়ালকোট স্ট্যালিয়নসের হয়ে। ১০ বছর আগে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল অ্যাবোটাবাদ ফ্যালকনস।

আসিফ ২০১৫ সালে ফয়সালাবাদে সুপার এইট টি-টোয়েন্টি কাপে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। আসিফের সমান রান করলেও অমিত পুরোপুরি তাঁকে (আসিফ) ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। আজ অমিত ব্যাটিং করেছেন ২০৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে। সেঞ্চুরি করেছেন ৪৪ বলে। ২০১৫ সালে আসিফ তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন ৪৩ বলে। সেবার ৪৮ বলে ৮ চার ও ১০ ছক্কায় ১১৪ রান করেছিলেন। তখন তাঁর স্ট্রাইকরেট ছিল ২৩৭.৫০।

অমিতের রেকর্ড সেঞ্চুরির দিন টস জিতে আজ আগে ব্যাটিং নিয়ে বরোদা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করে ২২০ রান। দলের রানের ৫১.৮২ শতাংশ রান আসে অমিতের ব্যাট থেকে। ১১৪ রানের মধ্যে ৯৪ রানই করেছেন তিনি বাউন্ডারি থেকে। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও জিততে পারেনি সার্ভিসেস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৭ রানে থেমে যায় সার্ভিসেস। ১৩ রানের জয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন অমিত।

স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অভিষেকে রেকর্ড ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন আসিফও। ২০১৫ সালে সুপার এইট টি-টোয়েন্টি কাপে টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া শিয়ালকোট নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে করেছিল ২৪০ রান। ২৪১ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৭.৩ ওভারে ১৫৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অ্যাবোটাবাদ। শিয়ালকোটের ৮৭ রানের জয়ে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছিলেন আসিফ। বোলিংয়ে ৪ ওভারে ৩১ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের জার্সিতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৫ টেস্ট ও ৩ ওয়ানডে খেলেছেন আসিফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হঠাৎ তিন ক্রিকেটারকে হারিয়ে বিপদে নিউজিল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
মিচেল স্যান্টনারসহ তিন ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন। ছবি: ক্রিকইনফো
মিচেল স্যান্টনারসহ তিন ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন। ছবি: ক্রিকইনফো

সিরিজের প্রথম টেস্টে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা থাকলেও নিউজিল্যান্ড জিততে পারেনি। জাস্টিন গ্রিভসের ডাবল সেঞ্চুরিতে সেই ম্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে ড্র করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পরশু মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচ শুরুর আগেই বড় ধাক্কা খেল কিউইরা।

চোটে পড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে গেছেন ম্যাট হেনরি, নাথান স্মিথ ও মিচেল স্যান্টনার। হেনরি পড়েছেন মাংসপেশির চোটে। পাঁজর ও কুঁচকির চোটে পড়ায় সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন স্মিথ ও স্যান্টনার। তাতে কপাল খুলেছে ক্রিস্টিয়ান ক্লার্কের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এই পেসারকে নেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের বাকি অংশের জন্য। ২৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৩৩ গড়ে ৭৭ উইকেট নিয়েছেন ক্লার্ক। ২৩.৫০ গড়ে ৮৯৩ রান করেছেন। অক্টোবরে ফোর্ড ট্রফির ওয়ানডে ম্যাচে সেন্ট্রাল ডিস্টিক্টসের বিপক্ষে সিনিয়র ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ক্লার্ক।

ক্লার্কের ঠিক আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে সুযোগ পেয়েছেন মিচেল হে। দুজনকেই নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট

প্লাঙ্কেট শিল্ডের তৃতীয় রাউন্ড থেকে নেওয়া হয়েছে। এদিকে গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল ক্রাইস্টচার্চে প্রথম টেস্টে বদলি ফিল্ডার হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন। দুজনকেই টেস্ট সিরিজের বাকি অংশের দলে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় পরশু ভোর চারটায় ওয়েলিংটনে শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। তৃতীয় টেস্টের ভেন্যু মাউন্ট মঙ্গানুই। ১৮ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট জিতেছে ১৯৯৫ সালে। ৩০ বছরের অপেক্ষা ক্রাইস্টচার্চে অল্পের জন্য ফুরোল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ম্যাচ জিততে না পারলেও ২০২৫-২৭ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এই ম্যাচে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে উইন্ডিজ। ৫.৫৬ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে ৯ দলের মধ্যে ৯ নম্বরে ক্যারিবীয়রা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত