বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এখন উৎসবের আমেজ। আগামীকাল ফুটবলে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবে ভারত। পরশু মিরপুরে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। শহরের দুই প্রান্তে দুই ম্যাচ সামনে রেখে চারটি দল অবস্থান করছে হোটেল সোনারগাঁওয়ে।
ফুটবলে বাংলাদেশ-ভারত, ক্রিকেটে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড—এই চার দল হোটেল সোনারগাঁওয়ে অবস্থান করছে বলে লিফটে, লবিতে কিংবা নাশতার টেবিলে একে অন্যের সঙ্গে দেখা হয়ে যাচ্ছে। লিফটে আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের সঙ্গে দেখা ফুটবল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার। ভারতের বিপক্ষে খেলার আগে চাপ কেমন—জামালের কাছে এমন প্রশ্ন করেছেন ক্রিকেট কোচ। হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনে জামাল বলেন, ‘‘বলেছি, ‘চাপ সব সময় থাকে। তবে এটা সামলানোই আমার কাজ। পরে তিনি বললেন, ‘আমিও ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে থাকব।’ ক্রিকেটের তারাও রোমাঞ্চিত। শুধুমাত্র সমর্থক কিংবা পরিবার নয়। অন্য খেলার লোকেরাও আগ্রহ দেখাচ্ছে। সারা বাংলাদেশ এই খেলা দেখবে।’’
মিরপুরে পরশু শুরু হতে যাওয়া আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট। কিন্তু দেশের ক্রীড়াঙ্গন এখন কাঁপছে ফুটবল-জ্বরে। জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামীকাল রাত ৮টায় বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচে বিশেষ চোখ থাকবে ক্রিকেটের মানুষদেরও। ক্যারিয়ারের ঊষালগ্নে ক্রিকেটের পাশাপাশি চুটিয়ে ফুটবলও খেলেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বিসিবি সভাপতি অধীর অপেক্ষায় আছেন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা দেখবেন বলে। এরই মধ্যে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়ালের পাঠিয়ে দেওয়া বিশেষ নিমন্ত্রণপত্র হাতে পেয়েছেন বুলবুল।
দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেট কোচ, সংগঠক ও ক্রীড়া কর্মকর্তাদের নিয়ে ৯ ও ১০ নভেম্বর হয়েছে বিসিবির দুই দিনব্যাপী ক্রিকেট কনফারেন্স। ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্রিকেট কনফারেন্সের প্রথম দিনে (৯ নভেম্বর) বিসিবি পরিচালক ও সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর বলেছিলেন, ‘ফুটবলারদের জন্য (ক্রিকেট) খেলা যাচ্ছে না সারা দেশে। তারা উইকেট ভেঙে ফেলল, উইকেট নষ্ট করে ফেলেছে। আবার ২৪ তারিখ আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল খেলা কুমিল্লা স্টেডিয়ামে। এই সমস্যাটা শুধু কুমিল্লার না। প্রতিটা জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে ফুটবল, প্রতিটা জেলার যেখানে ফুটবলের কাজ নেই, সেখানেও ফুটবল দখল করে রেখেছে এবং ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ।’ তাঁর এমন মন্তব্যের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশের ফুটবল অঙ্গনে। বিসিবির এই পরিচালক ক্ষমা না চাইলে অ্যাকশনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন ফুটবলাররা। এমনকি বিসিবি সভাপতির কাছে বাফুফে সভাপতি চিঠিও দিয়েছিলেন।
আসিফের মন্তব্যে যখন নিন্দার ঝড়, তখন তিনি নিজেই ক্ষমা চেয়েছেন। গতকাল ফেসবুক লাইভে এই সংগীতশিল্পী বলেন, ‘দুই বোর্ডের প্রধান একত্র হয়েছেন। গত ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ দেখতে জাতীয় স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি সমাধানে এসেছি যে, কীভাবে ফুটবল-ক্রিকেট একসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারি। আমি ফুটবল ভক্তদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি।’ দুঃখপ্রকাশ করেছেন বুলবুলও। সব পেছনে ফেলে আগামীকাল বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আসিফেরও বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচ দেখতে আসার কথা।