চট্টগ্রাম নগরের পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউর ২০ তলা থেকে লাফ দেওয়া আরিফ কবীর (২৪) ১০ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘটনায় আরিফের মা ফারহানা দোজা কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।
এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শিমুল চন্দ্র দাশ আজকের পত্রিকাকে জানান, বিকেলের দিকে আরিফের মা থানায় আসেন। তিনি জানান, তাঁর ছেলের বয়স যখন ১৫ বছর তখন থেকে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) রোগে ভুগছিলেন। প্রায় সময় কাউকে না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যেতেন।
আরিফ কবীর ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার তাজমহল রোডের মৃত এনামুল কবীরের ছেলে। তাঁর বাবা সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। ২০১৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁরা দুই ভাই এক বোন। আরিফ ছিলেন সবার বড়। আরিফ ঢাকার উত্তরায় একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তেন। ও লেভেল শেষ করলেও ‘এ’ লেভেল শেষ করেননি।
মায়ের বরাতে শিমুল চন্দ্র দাশ জানান, ৯ নভেম্বর মায়ের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে বাসা থেকে বের হয়ে পড়েন। ১০ তারিখে গুলশানের তাঁর এক বন্ধুর বাসায় আছেন বলে তাঁর মাকে জানান। পরে তিন দিন তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। ১৪ নভেম্বর কক্সবাজারে যান।
গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামে আসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে র্যাডিসনে ঢোকেন। পরে হোটেলটির ২০ তলায় যান। জায়গাটি ছিল ওপেন স্পেস। সেখানে নাশতার অর্ডার দেন। ধীরে ধীরে নাশতা করছিলেন তিনি। হঠাৎ ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে নিচে লাফ দেন। তাঁর নাশতার বিল হয় ২ হাজার ৭০০ টাকা।
কোতোয়ালি থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘তিনি যখন লাফ দেন ওই সময় দুজন বিদেশিও ছিলেন। তাঁরা বলেছেন, যুবকটি হঠাৎ লাফ দিয়েছেন। তবুও আমরা অধিকতর তদন্ত করছি।’
এদিকে র্যাডিসন ব্লুর কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যায় খুদে বার্তায় জানায়, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে গতকাল স্বপ্রণোদিত একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ঘটনাটি তদন্ত করছে। নিহতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। কঠিন সময়ে পরিবারের পাশে আছি।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে