রংপুর: রংপুর নগরীর আমাশু কুকরুল দক্ষিণপাড়ার কলেজছাত্রী ইসরাত জাহান মীমের মরদেহ গত ৮ জুন বাড়ির পাশের পুকুর থেকে পাওয়া যায়। সেসময় পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ধরে নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। দাফন করার ১৬ দিন পর আজ বুধবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে ওই কলেজছাত্রী হত্যা মামলার সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির জন্য মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
নিহত মীমের বাবা এই ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করে অভিযোগ করেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর মীমকে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার আল-আমিন ওরফে টাইগার নামের এক যুবক মীমকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত ৭ জুন মীমের প্রতিবেশী বান্ধবী আইভি আক্তার মীমকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন আইভিদের বাড়ির পাশে পুকুরে মীমের মরদেহ পাওয়া যায়। সেসময় পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ধরে নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
পরে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখে সন্দেহ হলে মীমের মা নার্গিস বেগম ১৬ জুন ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ এনে মীমের বান্ধবী আইভি আক্তার, তার ছোট ভাই মুন্না এবং মুন্নার বন্ধু আল-আমিন ওরফে টাইগারকে আসামি করে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালত পরশুরাম থানাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন বিচারক শেখ জাবিদ। আদালতের নির্দেশে ওই দিনই মামলা গ্রহণ করে পরদিন আল আমিন, মুন্না ও আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ১৮ জুন সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ উত্তোলনের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া আসামিদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আজ বুধবার তাঁদের রিমান্ড শেষ হয়।
মরদেহ উত্তোলনের সময় মীমের বাবা আব্দুল মালেক, মা নার্গিস আক্তারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মালিহা খানমসহ মেট্রোপলিটন পুলিশের পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু মুসা সরকার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আলতাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মালিহা খানম বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৬ (২) ধারা মোতাবেক মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যার কারণ জানা যাবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে