খুলনায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল জব্বার (৫৬)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙ্গা রেল স্টেশনের মধ্যবর্তী মুক্তেশ্বরী রেলগেট এলাকায়।
আব্দুল জব্বার যশোর শহরের নতুন খয়েরতলা এলাকার বাসিন্দা। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বরুণা গ্রামের মৃত ইমান আলী ফকিরের ছেলে তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, দুপুর ২টা থেকে আব্দুল জব্বার মুক্তেশ্বরী রেলগেট এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় তিনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কোমর বরাবর শরীর দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়।
লাশের পাশে পড়ে থাকা একটি ফাইলে ভোটার আইডি কার্ড ও নিজ হাতে লেখা সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ও জুনিয়র পরীক্ষায় বৃত্তিপ্রাপ্ত, এসএসসিতে ও এইচএসসিতে স্টার মার্কস এবং বিএ (পাস) কোর্সে অষ্টম হওয়া আব্দুল জব্বার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরির সুবাদে তিনি ১৫টি দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও ভ্রমণ করেছেন। বিমানবাহিনীর ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে প্রমোশন নিয়ে অবসরে গিয়ে যশোরের ২০০৪ / ০১ নতুন খায়েরতলা এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী এক মেয়ে প্রতিবন্ধী। আরেক মেয়ে সানজিদা চাকরিরত।
যশোর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পৌর সভার প্রশাসক বরাবর লিখিত সুইসাইড নোটে আত্মহত্যার মূল কারণ হিসেবে ঋণ ও সুদের জালে জর্জরিত বলে উল্লেখ রয়েছে। নয় ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মাসিক ৪০ হাজার টাকা সুদ দিতে হতো তাঁকে। সুইসাইড নোটে ‘মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ উল্লেখ রয়েছে।
সন্ধ্যায় জিআরপি থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে খুলনা জিআরপি থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
খুলনা জিআরপি থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, আজ শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে আব্দুল জব্বারের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে