ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন কলেজছাত্র মোহাম্মদ রিদওয়ান। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট মহিপাল এলাকায় দলটির নেতা-কর্মীদের ছোড়া একাধিক গুলিবিদ্ধ হয় সে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। কয়েক পর্যায়ে তার শরীর থেকে আটটি গুলি বের করা হয়। কিন্তু এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে রিদওয়ান।
রিদওয়ান ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের একমাত্র ছেলে। মানবিক বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে ফেনী সিটি কলেজে। তার চার বোনও পড়ালেখা করছে।
স্বজনেরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেষ পর্যায়ে ৪ আগস্ট সকালে সহপাঠীদের সঙ্গে ফেনীর মহিপাল এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেয় রিদওয়ান। বেলা পৌনে ২টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ চালায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় রিদওয়ানের কপালে ও পায়ে গুলি লাগে। সহপাঠীরা তাকে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার সময় তার পিঠে আরও তিনটি গুলি লাগে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে আরও চারটি গুলি। পরে একটি বাসায় কয়েকজন চিকিৎসক পায়ের চারটি ও পিঠের তিনটি গুলি বের করেন। রাতে তাকে ফেনীর আল বারাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অর্থের অভাবে বাকি গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। পরে স্কুলশিক্ষক আবুল কালামের সহায়তায় সোনাগাজীর একটি ক্লিনিকে অন্য দুটি গুলি বের করা হয়।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে সব গুলি বের করা হলেও যন্ত্রণা পিছু ছাড়ছে না রিদওয়ানের। এখানো রাতে বেড়ে যায় যন্ত্রণা।
রিদওয়ানের মা নুর নাহার বলেন, ‘রিদওয়ান এখনো রাতে যন্ত্রণায় ছটফট করে। তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা এত টাকা কোথায় পাব? নিজেদেরই চলতে কষ্ট হয়।’
বাবা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমি নিজেই অসুস্থ। কোনো রকমে পরিবার চালাচ্ছি। শুরু থেকে তার চিকিৎসার ব্যয় অন্যরা দিচ্ছেন। এখন ভালো চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু কী করব, বুঝতেছি না।’
ইউএনও কামরুল হাসান বলেন, আহতদের খোঁজ নিয়ে তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের চিকিৎসার পাশাপাশি সহায়তা করা হবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে