নড়াইলের নড়াগাতীর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের ভাই শেখ আনিসুর রহমানের হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব। টানা কয়েকবার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিহতের ভাই সোহেল বিজয়ী হচ্ছিলেন। তাঁদের আধিপত্য বিস্তার কমাতে সোহেলের ভাই আনিসুরকে ৬ মাস আগেই হত্যার পরিকল্পনা করে অপর পক্ষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩১ মে আনিসুরকে ইট ভাটায় ডেকে নিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাব সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর এসব তথ্য জানান।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় র্যাব-৩ এবং র্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, গত ৩১ মে নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া এলাকায় শেখ আনিসুর রহমানকে আধিপত্য বিস্তার এবং পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ধাওয়া করে ইট-ভাটায় নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ২ জুন ভিকটিমের ভাই শেখ সোহেল রানা বাদী হয়ে নড়াগাতী থানায় ৩১ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৭–৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জড়িতরা রাজধানীতে আত্মগোপন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা দল পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র্যাব-৩ এর ও র্যাব-৬ এর যৌথ অভিযানে ১০ জুন রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি জাহিদুল শেখ (৫০)। বাকিরা হলেন—শামীম শেখ (২৫), হাছানুর রহমান রিপন (৫০), জুলফিকার (৪৫), রাশিদুল শেখ (২৪), লিটু (২৮), হিটু (২৫), আজিজ শেখ (২৫), হানিফ শেখ (২৮), মুশফিকুর রহিম (২২), তৈয়েবুর রহমান (৫৫), শরিফুল শেখ (৩৮), ও সাইফুল শেখ (৪০)।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিষয়ে ফিরোজ বলেন, আসামি জাহিদুল এ হত্যা মামলা ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দলের খেলোয়াড় কাইয়ুম শিকদার হত্যাসহ ধর্ষণ মামলা ও যৌতুকের মামলার আসামি। জাহিদুল শেখ পেশায় একজন হোটেল ব্যবসায়ী। আসামি শামীম শেখও জাতীয় কাবাডি দলের খেলোয়াড় হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী সহিংসতাকে কেন্দ্র করে নড়াগাতী থানায় চারটি মামলা রয়েছে। আসামি শামীম পেশায় স্থানীয় একটি স্কুলের অফিস সহায়ক। আসামি জুলফিকারও বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দলের খেলোয়াড় কাইয়ুম শিকদার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াগাতী থানায় দুটি মামলা আছে। তিনি পেশায় একজন কৃষক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক ফিরোজ কবীর বলেন, আসামিরা পেশাদার খুনি। তারা বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে থাকে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে