শাইখ ইমতিয়াজ শিহাব আলোচনায় এসেছে গত বছর স্কুল ক্রিকেট থেকেই। আলোচনায় এসেছে অসাধারণ লেগ স্পিন দিয়ে। গত এক বছরে স্কুল ক্রিকেটে ভালো করা খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলকে বিসিবি পাঠিয়েছে মুম্বাই ও আসামে। প্রতিটি সিরিজেই লেগ স্পিনে মুগ্ধ করেছে শিহাব। দুই সফরেই দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি সে। আর তাতেই একটু একটু আশা তৈরি হচ্ছে তাকে নিয়ে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে কোনো লেগ স্পিনার এখনো আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। ১৭ বছরে পা দেওয়া শিহাব অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে, নাকি পথহারা পথিক হবে—সময় বলে দেবে। তবে শিহাব বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আশার আলো দেখাচ্ছে কবজির মোচড়ে।
কদিন আগে মুম্বাইয়ে মুম্বাই অনূর্ধ্ব-১৬ দলের বিপক্ষে সিরিজে ধারাবাহিক ভালো বোলিং করে প্রশংসা কুড়িয়েছে প্রতিপক্ষ কোচ, এমনকি আম্পায়ারদের। মাত্রই প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু। পারফরম্যান্স তো আছেই, শিহাব প্রতিটি সফর থেকে শিখছে মাঠে ও মাঠের বাইরে কীভাবে নিজেকে তৈরি করতে হয়। দুদিন আগে আজকের পত্রিকাকে সে বলছিল, ‘নিজেকে সব জায়গায় মানিয়ে নেওয়াটা শিখেছি। বিদেশে প্রতিপক্ষের মাঠে কীভাবে খেলার মোড় ঘোরাতে হয়, ফিল্ডিংয়ের পজিশন জানতে হয়। কিছু কিছু ব্যাপার থাকে, যেগুলো হয়তো দেশে শিখতে পারিনি, ওখানে গিয়ে শিখেছি। শৃঙ্খলাসহ অনেক কিছুই শিখছি।’
রিস্ট স্পিনের মতো কঠিন শিল্প আয়ত্ত করার লক্ষ্যে এগোনো শিহাবের বাংলাদেশের ক্রিকেটে একজন লেগ স্পিনারের চ্যালেঞ্জ অজানা নয়। এ চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে সে, ‘অবশ্যই এটা বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ দলে লেগ স্পিনার নেই। এটা অবশ্যই আমার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে বাংলাদেশও খুঁজছে।’
এই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে শিহাব এগোচ্ছে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, যেটা সব ক্রিকেটারকেই করতে হয়। ভবিষ্যতের কথা না ভেবে তার মনোযোগ এসব প্রক্রিয়াতেই, ‘ম্যাচ ধরে ধরে খেলছি, অনেক পথ বাকি। আমাদের যে প্রক্রিয়া আছে, সেটার মধ্যে যদি থাকি, অনূর্ধ্ব-১৭ খেলেছি, যদি পারফরম্যান্স ভালো করি এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যদি ডাক পাই, ওইভাবে নিজেকে তৈরি করব। ধাপে ধাপে চিন্তা করব।’
শৈশবে সবার কোনো না কোনো আদর্শ ক্রিকেটার থাকে। শিহাবের অবশ্য তা নেই। শেন ওয়ার্ন-অনিল কুম্বলের মতো কিংবদন্তি লেগ স্পিনারদের পুরোনো খেলার ভিডিও দেখেন। তবে তাঁদের কেউই তার আদর্শ নয়। দশম শ্রেণির ছাত্র শিহাব নিজের মতো করেই তৈরি হচ্ছে। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলছে, ‘আমি আমার মতো করে তৈরি হতে চাচ্ছি। অন্য বোলারদের বোলিং মাঝে মাঝে দেখি, যেটা ভালো লাগে।’
বোলিংয়ে শিহাবের মূল শক্তি লেগ স্পিন। বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনতে গুগলি, টপ স্পিন রপ্ত করার চেষ্টা করছে। স্লাইডার-ফ্লিপারও মাঝেমধ্যে চেষ্টা করে। সব মিলিয়ে একজন পরিপূর্ণ লেগ স্পিনার হওয়ার লক্ষ্য তার। বোলিংয়ের পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে ভালো ব্যাটিংও করে শিহাব। নিজেকে একজন অলরাউন্ডার হিসেবেই প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তার, ‘২০-৩০ রান করে অবদান রাখি। অলরাউন্ডার হওয়ার লক্ষ্য আছে। তাতে দল এবং নিজের জন্যও ভালো হবে। মূলত অলরাউন্ডার হওয়ারই চেষ্টা করছি।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে