যশোরের মনিরামপুরের ভান্ডারি মোড় এলাকায় ইটভাটার গরম হাওয়ায় গাছপালা, চারা বাগান ও খেতের ফসল পুড়ে গেছে। এতে অন্তত ৩০টি কৃষক পরিবার ক্ষতির শিকার হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিযোগ, সাহা ইটভাটার গরম হাওয়ায় বাড়ির পেয়ারা, আম ও আমড়া গাছ পুড়ে ফল ঝরে পড়ছে। প্রতি বছর ভাটার গরম হাওয়ায় কারণে তাঁদের এভাবে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সাহা ব্রিকস-৪ এর দক্ষিণ পাশে বসতবাড়ির আম, জাম, আমড়া, কলা, কতবেল, পেয়ারা, নারকেল, সুপারি, তেঁতুল, তালগাছ ও বাঁশঝাড় পুড়ে গেছে। একই সঙ্গে পুড়ে বিবর্ণ হয়েছে নার্সারির মালটা, লেবুর চারা, মেটে আলু, পটল ও লাউ খেত।
ভান্ডারি মোড় এলাকার বাসিন্দা খলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুদিন আগে সাহা ইটভাটার পাঁজার গরম হাওয়া ছেড়েছে। এতে বাড়ির ফলফলাদির সব গাছ পুড়ে গেছে। প্রথম দিনই বিষয়টি আঁচ করেছিলাম। আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে গাছপালা পোড়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িতে বড় একটা কতবেল গাছ ছিল। প্রতি বছর ২০-৩০ হাজার টাকার কতবেল বেচতে পারি। সে গাছটাও পুড়ে গেছে। বসতভিটায় দুই সারি মেটে আলুর গাছ ছিল সেগুলো পুড়ে গেছে।’
খোদেজা বেগম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘এক বিঘা পটল খেতের আয় দিয়ে সংসার ও ওষুধ পাতি চলে। ভাটার কারণে খেত পুড়ে গেছে। এখন চলব কি করে।’
অভিযুক্ত ইটভাটার ব্যবস্থাপক সনাতন সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের কমবেশি ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেব।’
রোহিতা ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তুহিন বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে সরেজমিন ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করা হয়েছে। সাহা ইটভাটার দক্ষিণপাশের প্রায় ৩০টি পরিবার ও কৃষকের ১০ বিঘা জমির চারা বাগান, ১০ বিঘা পটল খেতসহ ফলফলাদির গাছ পুড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গরম হাওয়ায় ভেসে আসা বিষাক্ত সিসা নিচে পড়ায় গাছপালা পুড়ে গেছে। বৃষ্টির ভেতরে ছাড়লে এ ক্ষতি হতো না। ভাটার মালিকপক্ষ এসে ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিন দেখেছেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ে বসতে চেয়েছেন।’
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে