জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ইতিহাস বিকৃতকারী ও স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করায় বিএনপির রাজনীতি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিএনপির রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে আওয়াজ তুলতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার খলনায়ককে এখন নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আজ থেকে ২০ বছর পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে থাকবেন না। ইতিহাস বিকৃতকারী ও স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করা এই দেশে চিরদিনের জন্য বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। স্বাধীনতার পরাজিত অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করছে বিএনপি। স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতিও ঘটাচ্ছে বিএনপি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চক্র ও তাদের দোসর অপশক্তি যারা এই স্বাধীনতা বিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, তাদের দিয়ে রাজনীতি করে, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করে এবং বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপশক্তি স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি করে, তারা এই দেশে রাজনীতি করার আসলে অধিকার রাখে না।’
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুতি কাউন্সিল আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। বিএনপির রাজনীতি বন্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এটির একটি ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম হওয়ার পরেও বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অপচেষ্টা করা হয়। স্বাধীনতার খলনায়কদের নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানের কবরে জিয়াউর রহমানের লাশ আছে কিনা, এ নিয়ে কথা বলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছি। কারও জানাজায় যদি একজনের লাশ বলে আরেকজনের লাশ দিয়ে দেওয়া হয় সেটি তো অনৈসলামিক । সেটা তো পরিপূর্ণভাবে অনৈসলামিক। সেটা তো ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সঙ্গে প্রতারণা করা। জনগণ মনে করে আপনারা জনগণের সঙ্গে সেই প্রতারণা করছেন। দলিল-দস্তাবেজও বলে আপনারা সেই প্রতারণাটা করেছেন।
সভায় সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে ক্যান্টনমেন্টে সে সময় কেমন প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার বিশ্বাস করেন না এমন লোকদের বঙ্গবন্ধুর চারদিকে পোস্টিং দেওয়া হয়। যাতে করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ও মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কোনো খবর না পায়। এই ষড়যন্ত্রের পেছনে থেকে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন জিয়াউর রহমান।
তাজুল বলেন, ‘আমার অনেক সময় হাসি লাগে। আজকে পত্রপত্রিকায় লেখক, সাহিত্যিক, সমালোচক কত লোকে কত কথা বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে বলেন। উনারা তো আগেও জীবিত ছিলেন। গত ২০-৩০ বছরে উনাদের কাউকে তো মুখ খুলতে দেখিনি। এখন উনারা বিভিন্নভাবে এত বেশি আওয়ামীলীগার হয়ে গেছেন, এত বেশি কথা বলেন আমার নিজেরও খুব আশ্চর্য লাগে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার কারণে সকলের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে কথা বলার। না হলে অনেকেই চুপ থাকতেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না এলে আজ আমরা যে সম্মান, সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি সেটা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে