শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

সেকশন

 

অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি আছে, যাদের ধারাবাহিক গণতন্ত্র পছন্দ নয়: শেখ হাসিনা

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৭:০২

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি আছে। এই ধারাবাহিক গণতন্ত্র তাদের পছন্দ হয় না। তিনি বলেন, ‘আর আমাদের কিছু আঁতেল আছে তাঁদের তো পছন্দই না। তাঁরা মনে করেন একটা অস্বাভাবিক সরকার থাকলে তাঁদের অনেক কদর বাড়ে।’

আজ সোমবার স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যারা আসে তাদের কিছু লোক, হাতের লাঠি লাগে বা খুঁটি লাগে। সেই লাঠি হতে পারছে না বলে মনে খুব দুঃখ। এ জন্য তাঁরা সব সময় দেশে-বিদেশে বদনাম করছে। দেশে আজেবাজে লিখে যাচ্ছে। আর বলে কিছুই নাকি হয় নাই।’ বাংলাদে

শের স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যে অবৈধ শক্তি ৭৫–এ জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের কোনো প্রেতাত্মা যেন আবার দেশের মানুষের স্বাধীনতা নস্যাৎ করতে না পারে। আবার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও দেশের জনগণকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থেকে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। 

বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে, তা কিছু লোকের ভালো লাগে না দাবি করেন শেখ হাসিনা বলেন, গরিব, দরিদ্র মানুষের হাড্ডিসার, কঙ্কালসার শরীর দেখিয়ে বাহির থেকে টাকা আনতে পারে এবং নিজেরা লুটপাট করে খেতে পারে। নিজেদের উদরপূর্তি করতে পারে এবং বিলাস বাসনে ঘা বাসাতে পারে। বাংলাদেশের মানুষকে গিনিপিগ বানিয়ে রাখবে, তাদের উঠতে দেবে না। এটা যারা চায়, তারা আন্তর্জাতিক সংস্থা, এখানে-সেখানে গিয়ে নানা ধরনের কথা বলে বেড়ায়। বলে কথা বলতে দেয় না। 

জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটা টেলিভিশন ও একটা রেডিও স্টেশন ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বেসরকারি খাতে কত টেলিভিশন। কে দিয়েছে এটা? আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। আমরা দিয়েছি।’

ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেওয়া সুযোগ ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নামে বদনাম করবে। আর বলবে কথা বলতে দেওয়া হয় না। ওদের কথার বাকি থাকল কী? সত্য দিয়ে, মিথ্যা দিয়ে নানাভাবে নানা অপপ্রচারতো চালিয়েই যাচ্ছে। সব কথা বলার পরে বলে কেউ কথা বলতে দেয় না। এর থেকে মিথ্যা আর কী আছে?’ 

রমজানে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচির সমালোচনা

রমজান মাসে বিএনপির আন্দোলন–কর্মসূচির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, রোজার মাসে মানুষকে একটু রেহাই দেন। বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের কষ্ট যাতে না হয়। সেই ব্যবস্থা করছি। আর সেখানে তারা আন্দোলন করবে। রোজা নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। মানুষের কষ্ট নিয়েও তাদের কোনো চিন্তা নেই। 

রমজান মাসে বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে খালেদা জিয়ার সরকার ১৭ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করে, তারা রমজান মাসের প্রতি সম্মান দেখাবে কি করে? তাইতো তারা এই মাসে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাস ও মানুষের দুর্ভোগের প্রতি তাদের কোনো অনুভূতিই নেই।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো ইফতার পার্টি না করে রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য তাদের মধ্যে এই অর্থ ও খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

দলীয় নেতা–কর্মীদের ওপর সরকার অত্যাচার, নির্যাতন করছে বিএনপির এমন অভিযোগের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ করে তাদের ওপরে নাকি খুব অত্যাচার করা হচ্ছে। আমরাতো কোনো অত্যাচার করি নাই। অত্যাচার করেছে তো ওই বিএনপি-জামায়াত জোট। 
জিয়াউর রহমান ও বিএনপি শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ওপর নির্যাতন হয়েছিল তার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তো তাদের মিছিল-মিটিং করতে দিচ্ছি। আওয়ামী লীগকে তো মাঠেই নামতে দেয়নি। হাত-পা কেটেছে। চোখ তুলে নিয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সারা বাংলাদেশে তারা তাণ্ডব করে বেড়িয়েছে। এখন তারা আসে গণতন্ত্রের ছবক দিতে।’ 

বিএনপি আওয়ামী লীগের ওপর যে অত্যাচার করেছিল তার একভাগ এখন করা হলে দলটিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তো সেই পথে যাই নাই। প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা মানুষের জন্য ন্যায় বিচার ও ন্যায় কাজ করে যাচ্ছি।’ 

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি এখন দেশে গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। বলে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছে যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে।’ 

টানা মেয়াদে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় ছিল অনেক বছর। তিন তিনবার নাকি খালেদা জিয়া ক্ষমতায়? যদিও ভোট চুরির দায়ে জনগণ দুই বার বিতাড়িত করেছে। তারপরও একটা কাজও দেখাতে পারবে? বিএনপির একটা মাইক বান্ধা থাকে? সেই মাইক সারা দিন বলে যায়। জানি না, রোজার সময়ও রোজা রেখে এত মিথ্যা কথা কেন বলে? সেটাও আমি জানি না? কিন্তু আওয়ামী লীগ যেটা বলে সেটা করে।’ 

সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীমের যৌথ সঞ্চালনায় সূচনা বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান প্রমুখ।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     

    আরপিও সংশোধনী বিল পাস হলে ইসির ক্ষমতা আরও খর্ব হবে: টিআইবি

    অর্থ আত্মসাতের মামলায় ৩৫ বছর পর খালাস পেলেন ইউপি চেয়ারম্যান 

    ৮ কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি: সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে ইসির নির্দেশ

    বিদ্যুতের কষ্ট ১৫ দিন পর আর থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

    বিএসএমএমইউর অনিয়ম খতিয়ে দেখা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

    দেশে খাদ্য মজুত ১৬ দশমিক ২৭ লাখ টন: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

    ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি পেল জামায়াত

    ফ্রান্সে ছুরি হামলার ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রে এখন ‘ব্যাকপ্যাক হিরো’

    পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা

    বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করলে ব্যবস্থা, বিএনপির মনিটরিং সেল গঠন

    বিএনপির সঙ্গে সংলাপের আশার প্রদীপ নিভে যায়নি: কাদের

    অপাত্রে ভোট দিয়ে আর ধোঁকা নয়: খুলনায় হাতপাখার প্রার্থী