রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বা বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মো. জিয়াউল হক।
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির বিমা দাবির ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার দেশে এসেছে। সরকারি বিমা কোম্পানি সাধারণ বিমা করপোরেশন হয়ে এ অর্থ বিএসসির হিসাবে জমা হচ্ছে।’
সূত্র জানিয়েছে, সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বা বিএসসির মালিকানাধীন এ জাহাজটির ক্ষতিপূরণ বাবদ বিমা কোম্পানির কাছ থেকে ২ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার পেতে যাচ্ছে। প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ১০৬ টাকা ধরে হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৩৭ কোটি টাকা হয়।
তবে বিএসসি জিএম (প্রশাসন) মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাহাজটির ক্ষতিপূরণ পেতে আমরা ক্লেইম করেছিলাম। কিন্তু ক্ষতিপূরণের অর্থ এখনো আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। এটা প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে।’
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ওই বছরের ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রাশিয়ার মিসাইল হামলার শিকার হয় বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। হামলায় নিহত হন জাহাজটিতে দায়িত্বরত বাংলাদেশি প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান। পরে জাহাজটিতে আটকে পড়া ২৮ নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
এর আগে ২০১৮ সালে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ২০৮ কোটি টাকায় চীন থেকে কেনা হয়। বাণিজ্যিক এই জাহাজটি ডেনমার্কের চার্টারার ডেল্টা করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভাড়ায় চলছিল। গত বছরের ২৬ জানুয়ারি জাহাজটি মুম্বাই বন্দর থেকে রওনা হয়ে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।
এরপর প্রায় ৬০ নটিক্যাল মাইল সরু চ্যানেল পেরিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে অলভিয়া বন্দরের অদূরে নোঙর করে জাহাজটি। পরদিন সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির। কিন্তু এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে জাহাজটি হামলার শিকার হয়।
পরে জাহাজটির মালিক বিএসসি ক্ষতিপূরণ পেতে বিমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে। ক্ষতিপূরণ বাবদ বিদেশি বিমা কোম্পানির কাছ থেকে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র জন্য ২ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে