Alexa
রোববার, ২৬ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

জয়দেবপুরে গুলি

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৩, ১০:১৩

জয়দেবপুরে গুলি ১৯ মার্চ সেনাবাহিনী জয়দেবপুরে গুলি চালিয়েছিল। ঢাকা থেকে ২০ মাইল দূরে জয়দেবপুর ও তার আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনীর গুলিতে এ দিন ২০ ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে বেসরকারিভাবে জানানো হয়। বহু লোক আহত হয়। স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, এ দিন বেলা আনুমানিক আড়াইটায় সেনাবাহিনীর কোনো কোনো কাজের প্রতিবাদে জয়দেবপুরে প্রায় ১০ হাজার লোক এক শোভাযাত্রা বের করেন। তাঁরা জয়দেবপুর রেলগেটের কাছে মালগাড়িসহ অন্যান্য ভারী জিনিসপত্র ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেন। এই সময় সেনাবাহিনী ও 
স্থানীয় লোকজনের মধ্যে গোলাগুলি বিনিময় হয়। সেনাবাহিনীর গুলিতে ১৪ বছরের নেয়ামত ও ৪০ বছর বয়সী মনু খলিফা নামে দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জয়দেবপুরে সেনাবাহিনী নিরস্ত্র নাগরিকদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করার তীব্র নিন্দা করে বলেন, ‘যাঁরা মনে করেন যে বুলেট বা শক্তি প্রয়োগের দ্বারা গণ-আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে, তাঁরা আহম্মকের স্বর্গে বসবাস করছেন।’

ধানমন্ডির বাসভবনে সমবেত দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘সামরিক কর্তৃপক্ষ প্রচার করেছে যে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা যদি সত্য হয়, তবে জয়দেবপুরের এক বাজারে গিয়ে সেনাবাহিনী নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর গুলি চালাল কীভাবে? ঢাকায় অবস্থানরত প্রেসিডেন্ট এবং সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়ার কাছে আমি এই প্রশ্নের জবাব চাই।’

নিজের বাড়ির সামনে শোভাযাত্রা করে আসা সমবেত বিক্ষুব্ধ বিজ্ঞান কর্মচারীদের উদ্দেশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের স্বাধিকার অর্জনের জন্য কোনো কিছুকেই অসাধ্য বলে বিবেচনা করা হবে না। বাংলাদেশের রাজপথ অলিগলি শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। আজ আবার বাঙালির রক্তে জয়দেবপুরের মাটি সয়লাব হয়ে গেছে। আর কত রক্ত চাও, আর কত রক্ত পান করলে তোমাদের তৃষ্ণা মেটে? আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান চাই। আর তোমরা চাও অস্ত্রের জোরে শক্তির জোরে শাসন করতে। কিন্তু বাঙালিদের শক্তির জোরে দাবাইয়া রাখা যাবে না।’

ন্যাপ প্রধান মাওলানা ভাসানী জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে শেখ মুজিবকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে আহ্বান জানান। দেশের রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে আলোচনার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার উপদেষ্টারা এ দিন সন্ধ্যায় ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয় এবং তাতে উভয় পক্ষের তিনজন করে সদস্য যোগদান করেন। শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ড. কামাল হোসেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষে ছিলেন এ আর কর্নেলিয়াস, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান।

এ দিন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ভাষা আন্দোলনে কারাবরণকারী নারায়ণগঞ্জের প্রবীণ নেতা খান সাহেব ওসমান আলী মারা যান।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো এ দিন বলেন, ক্ষমতার ব্যাপারে তাঁদের হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করা হলে তিনি চুপ করে থাকবেন না। এদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের ভুট্টো-বিরোধী যুক্তফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নেন পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকেরা।

গ্রন্থনা: জাহীদ রেজা নূর

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    পঠিতসর্বশেষ

    এলাকার খবর

     
     

    অযথা ৪২ কোটি টাকার যন্ত্র কেনার উদ্যোগ

    এগিয়ে যেতেই হবে

    রায় হওয়ার আগে আসামি ‘কনডেম’ সেলে

    মানুষ মারার লাইসেন্স দিচ্ছি চালককে

    সেই এক মার্চ এসেছিল

    গতির তোড়ে যাচ্ছে প্রাণ

    দুর্গাপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পর বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার ৭ 

    ধামরাইয়ে ওয়ার্ড আ. লীগের সভাপতির ওপর হামলা, থানায় মামলা 

    ছবিতে বিভিন্ন দেশে কয়েকজন নবীর সমাধি

    মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে শিশুর মৃত্যু, বাবা হাসপাতালে 

    নওগাঁয় র‍্যাবের হেফাজতে ভূমি অফিসের নারী কর্মচারীর মৃত্যু

    চাঁদপুরে নৌবাহিনীর জাহাজ ‘মেঘনা’ সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত