নীলফামারীর সৈয়দপুরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহরের নয়াবাজার এলাকার লবণ ব্যবসায়ী এজাজের ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ওই গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি নিহতের পরিবারের। অপরদিকে নিহতের স্বামীর পরিবার বলছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশেরও প্রাথমিক ধারণা এটি আত্মহত্যা।
নিহত গৃহবধূর নাম সোনালী জান্নাতী বেগম (২৩)। তিনি শহরের হাতিখানা মৌয়াগাছ এলাকার মো. ফারুকের মেয়ে। তাঁর স্বামীর নাম মো. জাফর ইকবাল চাঁন। শহরের পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ধোপা মাঠ এলাকার মো. তাহেরের ছেলে জাফর ইকবাল চাঁন। তিনি পেশায় একজন ট্রাকচালক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী বলছে, জান্নাতী ও চান ড্রাইভারের ৫ বছর আগে বিয়ে হয়। জান্নাতী চাঁনের তৃতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর থেকেই জান্নাতীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর ঝগড়া লেগে থাকত। কয়েক দিন আগে জান্নাতীকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়ায় ওঠেন চান। ঘটনার আগের দিন শুক্রবার রাতেও মোবাইলে জান্নাতী ও চাঁনের ঝগড়া হয়। পরে ওই দিন রাত ৩টায় স্বামী চাঁন বাসায় গিয়ে স্ত্রীকে ডাকাডাকি করেন। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করার পরও দরজা ভেতর থেকে না খোলায় পুলিশে খবর দেন তিনি। পরে পুলিশ গিয়ে জানালা দিয়ে দেখেন গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ফ্যানের সঙ্গে তাঁর মরদেহ ঝুলছে। পরে সকালে দরজা ভেঙে জান্নাতীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূর বাবা ফারুক হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। মেরে ফেলে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে মধ্যরাতে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের খবর দিয়েছে। আত্মহত্যা করে থাকলেও তাঁকে টর্চার করা আর অবৈধ কাজে বাধ্য করতে চাওয়ায় সে এই পথ বেছে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ভেতর থেকে সিটকিনি লাগানো দরজা ভেঙে, ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী এটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পরই বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা।’
ওসি আরও বলেন, ‘ওই গৃহবধূর স্বামী চাঁনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে