Alexa
শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

সখীপুরে এনজিওর ঋণের দায়ে কারাগারে গৃহবধূ

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৩, ১৮:০৬

আদালতে পাঠানোর আগে থানায় কথা হয় গৃহবধূ রুমার সঙ্গে। ছবি: আজকের পত্রিকা  টাঙ্গাইলের সখীপুরে বেসরকারি সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) ঋণের দায়ে করা মামলায় এক গৃহবধূকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অভিযোগ উঠেছে, ঋণের টাকা পরিশোধ করার পরেও এনজিও কর্তৃপক্ষ আদালতকে তথ্য না দেওয়ায় গৃহবধূকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এনজিওর এক কর্মকর্তার দাবি, ওই গৃহবধূ সব টাকা পরিশোধ করেননি।

আজ বুধবার গৃহবধূকে টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালত পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার প্রতিমা বংকি দক্ষিণপাড়া এলাকা থেকে সখীপুর থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গৃহবধূর নাম রুমা। তিনি ওই এলাকার আবু আহম্মেদের স্ত্রী। 

গৃহবধূ রুমার দেবর নাসিম সিদ্দিকী জানান, রুমা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে এনজিও সংস্থা টিএমএসএস (ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ)-এর নলুয়া শাখা থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এরপর তিনি ওই ঋণের চারটি কিস্তি পরিশোধ করেন। পরে করোনাকালীন মন্দা পরিস্থিতিতে একসময় ঋণের কিস্তি পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করেন রুমা। ফলে ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ ৫০ হাজার টাকা ঋণ খেলাপি দাবি করে রুমার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করে। 

পরে ওই মামলাটি তুলে নেওয়ার শর্তে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি অসহায় রুমা ও তাঁর পরিবার ২৫ হাজার টাকা টিএমএসএস নলুয়া শাখার কর্মকর্তা শাহীনের কাছে পরিশোধ করেন। এনজিও কর্মকর্তা শাহীন একটি সাদা কাগজে সাক্ষর করে ২৫ হাজার টাকা বুঝে পেয়েছেন মর্মে লিখিত দেন। কিন্তু তাঁদের এই সমঝোতা বা লেনদেনের বিষয়টি টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ আদালতকে অবহিত না করায় আদালত গত ১২ ফেব্রুয়ারি গৃহবধূ রুমার বিরুদ্ধে এক মাস কারাদণ্ডের ঘোষণা করেন। 

এদিকে সাজা ঘোষণার পরও বিষয়টি গোপন করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি টিএমএসএস-এর ওই কর্মকর্তা খেলাপি ঋণের আরও সাত হাজার টাকা কিস্তি গ্রহণ করেন। অন্যদিকে সাজা হওয়ার ভিত্তিতে আদালত রুমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সখীপুর থানা-পুলিশ গৃহবধূ রুমাকে গ্রেপ্তার করে বলে জানান গৃহবধূর দেবর। 

থানা কাস্টডিতে গৃহবধূ রুমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু করোনার সময় আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। তবুও জেল-জরিমানার ভয়ে ধার-দেনা করে এনজিওর টাকা পরিশোধ করতেছি। ৬০ হাজার টাকা ঋণের মধ্যে চারটা কিস্তি দিছি, মামলার পর দুই কিস্তিতে ৩২ হাজার টাকা নিছে আর ওই সমিতিতে আমার কিছু সঞ্চয়ের টাকা আছে, সব বাদ দিলে আমার কাছে আর তিন-চার হাজার টাকা পাবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে টিএমএসএস—এর কিস্তি গ্রহণকারী ওই কর্মকর্তা শাহীনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

পরে কথা হয় টিএমএসএস-এর নলুয়া শাখার আইন বিভাগের কর্মকর্তা মশিউর রহমানের সঙ্গে। নিজেদের দায় এড়িয়ে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে টিএমএসএস কর্তৃপক্ষের কোনো ভুল নেই। মূলত গৃহবধূ রুমা তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন নাই। সম্ভবত কোনো হাজিরার তারিখে তিনি আদালতে উপস্থিত হননি। এই কারণে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এ ছাড়া তিনি ঋণের সব টাকা পরিশোধও করেননি।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে রুমা নামের এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করে বুধবার সকালে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। থানা-পুলিশ আদালতের আদেশ পালন করেছে মাত্র।’

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     

    পুঠিয়ায় ট্রাকের চাপায় আহত শিক্ষকের মৃত্যু 

    শকুন মৃত্যুর ঘটনায় বন বিভাগের মামলা

    পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১ 

    বাচ্চা কোলে নিয়েই ছিনতাই করতেন তাঁরা

    সুন্দরগঞ্জে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু

    কেশবপুরে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ, চিকিৎসায় ভরসা কবিরাজ

    রেকর্ড ভাঙা হ্যারি কেইনকে কিংবদন্তি বললেন রুনি

    পুঠিয়ায় ট্রাকের চাপায় আহত শিক্ষকের মৃত্যু 

    সাজার পরদিনই লোকসভায় রাহুল, রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বিরোধীদের

    ব্রাজিলে পুলিশ-সন্ত্রাসী সংঘর্ষ, নিহত ১৩ 

    শকুন মৃত্যুর ঘটনায় বন বিভাগের মামলা

    পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১