পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় গান লিখতেন। খুব ভালো কিছু গান আছে তাঁর। তাঁকে কিশোর কুমার ডাকতেন ‘পোলাও বাবু’ নামে। একদিন পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে তিনি বললেন, ‘পোলাও বাবু, “এক যে ছিল রাজপুত্তুর” গানটার মিউজিক ডিরেক্টর বীরেশ্বর সেন...’
তাঁকে থামিয়ে দিয়ে পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘বীরেশ্বর সরকার, সেন নয়।’
কিশোর কুমার বললেন, ‘ওই হলো। উনি চমৎকারভাবে ইংরেজি ‘‘ওভার দ্য ওয়েভ্স’’ টিউন থেকে না বলিয়া গ্রহণ করিয়াছেন। বাঙালি একটা দারুণ কথা ব্যবহার করে, ‘‘চুরি বিদ্যা বড় বিদ্যা, যদি না পড়ে ধরা’’। জবাব নেই বাঙালির! মিউজিক ডিরেক্টরকে কংগ্রাচুলেশন জানাবেন।’
পুলক বললেন, ‘আপনিও তো দারুণ গেয়েছেন। ‘‘কী দারুণ দেখতে’’ গানটা তো শুধু ইন্ট্রোডাকশনে ‘‘আহা’’ বসিয়েই সুপারহিট বানিয়ে দিয়েছেন!’
গানের কথায় ‘আহা’ ছিল না। কীভাবে সেটা আমদানি করলেন কিশোর, তা বললেন এরপর। ঢাকাইয়া কিংবা কলকাতার নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় যেমন ‘শ’ কে ‘স’ উচ্চারণ করে, সেভাবেই কিশোর কুমার বললেন, ‘স্যামবাজারের সসিবাবু হয়ে বসে আছি, স্যামবাজারের একটা রকে। সামনে দিয়ে একঝাঁক মেয়ে কলেজে যাচ্ছে। একটা মেয়েকে দারুণ লাগল। দেখেই বলে উঠলাম, “আহা! কী দারুণ দেখতে!/চোখ দুটো টানা টানা’’।’
পুলক বললেন, ‘কিশোরদা, আপনার গান এত প্রাণবন্ত হয় কেন জানেন? আপনি তো প্রথমে অভিনেতা, তারপর গায়ক। আপনার কণ্ঠে গানের কথা সুর ভরা প্রাণের কথা হয়ে যায়।’
সূত্র: পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, কথায় কথায় যে রাত হয়ে যায়, পৃষ্ঠা ১৫৬
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে